পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/২৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՀԵՏ বিভূতি-রচনাবলী তোমায়। তাই কি কখনো হয় ? তুমি আমি বললে কি হবে বলো। এমনি বলছিলাম। চলো নিচে যাই—রাত্রে কি খাবে ? —কিছ না । আমি কিছু খাইনে রাত্রে । —বেশ, একটু দ্বন্ধ একটু মিটি খেতে আপত্তি আছে ? — আমি কিছুই খাবো না, আপনি ব্যস্ত হবেন না। হেনা মনে মনে বললে, তুমি না খেয়ে মরো না, আমার কি ? এমন একগয়ে বালাই যদি আর কখনো দেখে থাকি । যা বলবে তাই । ‘না' বললে আর ‘হ"ি করাবার জো নেই। এই সময় নিচের তলায় খুব একটা চে'চামেচি শোনা গেল । কে জড়িত স্বরে চীৎকার করছে, কে গালাগালি করছে । শরৎ ভীতমুখে বললে, ওঞ্চি ভাই ? কে চে'চাচ্ছে ? আমাদের বাড়িতে না ? হেনা পাংশ মুখে বললে, না, ও আমাদের বাড়ি নয় । হরি সা মণ খেয়ে কমলার ঘরে ঢুকে নিত্যকার মত উপদ্রব শুরু করেছে । সম্ববনাশ । এই সময় নিচে মারধরের শব্দ শোনা গেল। এও নতুন নয়, হরি সা মদ খেয়ে এসে কমলাকে ঠেঙায় {াঝে মঝে - পয়সার খাতিরে গায়ের কালশিরে ঢেকে আবার হাসতে হয় কমলাকে । কিন্তু— o শরৎ ব্যস্ত হয়ে বললে, না, দেখুন, আমাদের বাড়িতে নিচের ঘরেই । কমলার ঘরের দিকে মনে হচ্ছে । যান, যান, আপনি শীগগির যান- দেখ.ন—চলন যাই আমরা । কে হয়তো বদমাইশ ঘরে ঢুকেছে-- - চে'চামেচি বাড়ল । আর রক্ষা হ’ল না । হরি সা গন্দভের মত চে'চানি জড়েছে। হরি সা যে একদিন মাটি করে দেবে সব, হেনা তা জানতো। সেই লম্বা কথাওয়ালা গিরীন এই সময় আসক না দেখা যাক । কমলার গলার কান্না মেশানো আত্ত" স.র শোনা গেল—ও দিদি, তোমরা এসো, আজ আমায় মেরে ফেললে মুখপোড়া আর পারি নে দিদি - উঃ আর রক্ষা হয় না । তবুও অ্যাকট্রেস হেনা মরীয়া হয়ে শেষ চাল চাললে । মুখে দিব্যি শান্ত হাসি এনে বললে, ও আমাদের বাড়ি না, পাশের বাড়ির সেই বড়ে মাতালটা । ছাদ থেকে মনে হয় যেন আমাদের বাড়ি । রোজই শনছি। যাবেন না নিচে-জানলা দিয়ে ওদের ঘরটা দেখা যায় কি না ? আমাদের দেখলে আবার গালাগালি করবে। আমি তো এ সময় সি*iড় দিয়ে नाभि ८म সাত ওদিকে কমলার চীৎকার তখনও শোনা যাচ্ছে । শরৎ বললে, ও তো পন্ট গঙ্গাজলের গলা—আপনি কি বলছেন ? তার পর সে নিজে এগিয়ে গিয়ে কমলার ঘরে ঢুকলো। গিয়ে যা দেখলে তাতে সে অবাক হয়ে গেল । কমলা মেঝেতে পড়ে কাঁদছে, একটা কালো মোটা-মত লোক তন্তপোশের ওপর বসে, তার হাতে একখানা পাখা। পাথরে বাঁটের দিকটা উচিয়ে বোধ হয় কিছুক্ষণ আগে সে কমলাকে মেরেছে, কারণ পাখাখানা উলেটা করে ধরা রয়েছে লোকটার হাতে । শরৎকে দেখে কমলা দিশাহারা ভাবে বললে, আমায় মারছে গঙ্গাজল—আমায় বাঁচাও— শরৎ কমলার হাত ধরে বললে, তুমি চলে এসো আমার সঙ্গে—