পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/৩২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কেদার রাঞ্জা లిSa দিচ্ছে। ওই দেখতে তার খব ভাল লাগে—খবে—খবে ভাল লাগে—ওই সব ছত্রেই বিবেক্ষবর ও অন্নপ্রণা প্রত্যক্ষ বিরাজ করেন বভূক্ষ অভাজনদের ভোজনের সময়—মন্দিরে তাঁদের . দেখার চেয়েও সে দেখা ভালো । অনেক, অনেক ভালো । ঝি এসে বলে, ও বামন-ঠাকরন, মাছের ঝোল দিয়ে বাবকে আগে ভাত দিতে হবে। খেয়ে এখনি বেরিয়ে যাবেন— —ও ঝি শোনো—পাঁচফোড়ন মোটে নেই, বাজার থেকে আগে এনে দাও— ঝি চলে যায়। মাছের ঝোল ফোটে । নিভৃত রান্নাঘরের কোণে গোলমাল নেই—বসে শরৎ স্বপ্ন দেখে, সে প্রকা"ড ছত্র খুলেছে, কেদার ছত্র, বাবার নামে । কত লোক এসে খাচ্ছে—অবারিত দ্বার। বাবার ছত্র থেকে কোনো লোক ফিরবে না, অনাহারে কেউ ফিরে যাবে না। সে নিজে দেখবে শনবে—সকলকে খাওয়াবে। সে দু-হাতে অন্নদান করবে। সকলকেই—ব্রাক্ষণ শুদ্ৰ নেই, তুন্ডুমণভু নেই, বাঙাল ঘটি নেই—সকলেই হবে তার পরম সন্মানিত অতিথি। নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সবাইকে খাওয়াবে সে । শরতের মাথার মধ্যে কি যেন নেশা জমেছে ৷••• রান্নাবান্না সেরে সে মিনসুর কাকীমাকে বলল, আজ একবারটি বাইরে ষাবো ? —কোথায় ? 翰 需》 শরৎ হঠাৎ সলঙ্গ হেসে বললে—সে বলবো এখন এসে । শরতের হাসি দেখে মিনার কাকীমার মনে সন্দেহ হ'ল । সে বললে, কোথায় না” বললে চলে ? সব জায়গায় যেতে দিতে পারি কি ? রাগ করলে তো চলে না—বঝে দেখতে হয়। —ছত্তর দেখতে । রাজরাজেশ্বরী ছত্তরে অনেক বেলায় খাওয়া-দাওয়া হয়, পটের ছত্তরেও হয়—দেখে আসি একটিবার— R মিনার কাকীমা শরতের মনের উত্তাল উদ্বেল সমুদ্রের কোনো খবর রাখে না—সেবা ও অন্নদানের যে বিরাট আকুতি ও আগ্রহ তার কোনো খবর রাখে না—বললে, কেন ছত্তর দেখতে কেন ? সে আবার কি ? —দেখি নি কখনো । যেতে দিন আজ আমায়— শরতের কণ্ঠে সাগ্রহ মিনতির সরে মিনর কাকীমা ছয়টি দিতে বাধ্য হ'ল, তবে হয়তো শরতের কথা সে আদেী বিশ্বাস করলে না । শরৎ এসে বললে, ও রেণ পোড়ারমুখী—কি হচ্ছে ? —e, আজ যেন খুব ফুত্তি, তোমার কি হয়েছে শুনি ? —কি আবার হবে, তোর ম’ডু হবে । চল ছত্তরে যাই, খাওয়া দেখে আসি । রেণু অবাক হয়ে বললে, কেন ? • —কেন, তোর মাথা । আমি যে কাশীতে ছত্তর খলছি জানিস নে ? —বেশ তো ভাই । আমাদের মত গরীব লোকে তাহলে বেচে যায়। দ-বেলা তোমার ছত্তরে পেট ভরে দটো খেয়ে আসি । হাড়ি-হোসেলের পাট উঠিয়ে দিই। কি নাম হবে, শরৎসন্দেরী ছত্র ? —না ভাই । বাবার নামে—কেদার ছত্তর । কেমন নাম হবে বল তো ? —যাই বলো ভাই, শরৎসন্দেরী ছত্র শনতে যেমন, তেমনটি কিন্তু হ’ল না। রাজরাজেশ্বরী ছত্রে ওরা যেতেই ছত্রের লোকে জিজ্ঞেস করলে—আপনারা আসন, মেয়েদের জন্যে আলাদা বন্দোবস্ত আছে— শরৎ বললে, চল ভাই রেণ, দেখি গে— —যদি খেতে বলে ?