পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/৪৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ෆ්o বিভূতি-রচনাবলী ভুত বেড়াচ্চে সর, সতোর মত। আমি বললাম—বলেন কি ? —হ’্যা, বিভূতিবাব । ওরা আবার তারা ধরে নামে । আমি সকালে উঠে দেখোঁচ বনের সব তারা পড়ে আছে । সমযf্য ওঠবার আগে তারার ঝকি আপনিই আকাশে উঠে যায়। কেবল যেগুলো শিশিরে খুব ভিজে যায়, সেগুলো ঝোপের তলায় খুব ভোরে পড়ে থাকে। ভিজে ভরি হয়ে যায় কিনা, তাই আর উঠতে পারে না। আমি খুব অবাক-মত মুখখানা করে নিরাপদর মুখের দিকে চেয়ে রইলাম । ও নাকি সযf্যালোক থেকে তাপ সংগ্রহ করে দেশের কাজ করবে, সেজন্যে সয"কে জয় করচে । রোজ মাঠে বসে সয্যের দিকে একদণ্টে চেয়ে থাকে । ঘন অন্ধকার । বড় বড় গাছের মাথায় অগণ্য নক্ষত্রদল জলজল করচে—কি অসীম দ্যতিলোক পৃথিবীর চারিধার ঘিরে। টচ্চোর ব্যাটারি ফুরিয়ে এসেচে বলে একরকম অন্ধকারেই চলে আসতে হোল। নিরাপদ সঙ্গে খানিকদরে এল গলপ করতে করতে—রাস্তার ধারে সাঁকোর ওপর দু-জনে কতক্ষণ বসলাম । আমি গল্প করি আর মাথার ওপর চেয়ে চেয়ে নক্ষত্র দেখি, একবার চারিধারের অন্ধকার বনানী দেখি । আজ বিকেলে কুঠীর মাঠে গিয়ে একটা চমৎকার সয্যাস্ত লক্ষ্য করলাম। আর সেই বন ঝোপের সগন্ধ । এ গন্ধটা আমায় বড় মগধ করে রেখেচে । এদের ছেড়ে কলকাতা চলে যাবার দিন নিকটবৰ্ত্তী হয়েচে মনে ভাবলেই মনটা খারাপ না হয়ে পারে না, কিস্ত এখানে নানা কারণে কাজ করা সম্ভব হয়ে উঠচে না—প্রথম কথা, সঙ্গে বই নেই—আমার নোটবইগলো নেই। এমন কি লেখবার উপযুক্ত খাতা বা কাগজপত্র পয্যন্ত বেশী আনি নি। বই ভিন্ন আমি থাকতে পারি নে। বই উপযুক্ত সংখ্যায় না আনা একটা বড় ভুল হয়ে গিয়েচে এ ছয়টিতে। এমন ভুল আর কখনো হবে না । দুটো ছোট গল্প লিখেচি—এবারকার পজোতে তার বেশী কিছদ হ’ল না । আমাদের পাড়ার সবাই কাল সকালে সাত-ভেয়ে কালীতলায় যাবে। অভিলাষের নেীকো বলে ওই পথে অমনি সইমাদের রান্নাঘরে গিয়ে বসলাম । কতকাল পরে যে ওদের রান্নাঘরে গেলাম ! নলিনীদিদি যত্ন করে বসালে—চা আর খাবার দিলে, তারপর কতকালের এ গল্প ও গল্প, কত ছেলেবেলার কথা, নলিনীদিদির বিয়ের সময়কার ঘটনা। ওর স্বামী উত্তর আফ্রিকায় ছিলেন সে সব গল্প । সোনার মেয়ে হয়েচে, কি সন্দের টুকটুকে মেয়েটি, কি চমৎকার মুখখানি, বছর দুই বয়েস হবে । আমায় দেখে কেমন ভয় পেলে, কিছুতেই আমার কোলে আসতে চাইলে না । * টেপি দিদিকে দেখলাম আজ সকালে বছর পনেরো পরে । একেবারে বড়ী হয়ে গিয়েচে । সেই ফস রঙ, সন্দের চোখমুখের আর কিছু নেই। মানুষের চেহারা এত বদলেও যায় কালে ! যা হোক, ষোল বছর পরে যে ওরা আবার দেশে এসেচে এই একটা বড় আনন্দের বিষয় । আমাদের গ্রামের প্রকৃতি অদ্ভুত, কিস্ত মানুষগুলো বড় খারাপ। পরপর ঝগড়াম্বলম্ব, ঈষা, পারিবারিক কলহ, জ্ঞাতিবিরোধ, সন্দেহ, কুসংস্কার এতে একেবারে ডুবে আছে । লেখাপড়া বা সৎচচ্চার বালাই নেই কারো । AEschylus-এর কথায় ঃ “They live like silly ants ln hollow caves unsunned ; To them comes no sun, no moon,