পাতা:দেবী চৌধুরানী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রথম খণ্ড-পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ * es •. বুঝিলেন । এ সকল কথা মেয়েরাই আগে বুঝে। গিল্পী বুলিই ক্লাজেই কৰ্ত্ত বুঝিলেন। তখন হরবল্লভের বুকে শেল বিধিল। হরবল্লভ কাদিতে কাদিতে বলি, “ছি! ছি! কি করিয়াছি! আপনার পায়ে আপনি কুড়ুল মারিয়াছি।” গিন্না প্রতিজ্ঞা করিলেন, "ছেলে না বাচিলে আমি বিষ খাইব।” হরবল্লভ প্রতিজ্ঞা করিলেন, “এবী দেবতা ব্ৰজেশ্বরকে বঁাচাইলে, আর আমি তার মন না বুঝিয়া কোন কাজ করিব না।” \ ব্ৰজেশ্বর বালি। ক্রমে আরোগ্যলাভ করিতে লাগিল—ক্রমে শৰ্ম্ম ত্যাগ করিল। এক দিন হরবল্লভের পিতার সাংবৎসরিক শ্ৰাদ্ধ উপস্থিত। হরবল্লভ করিতেছেন, ব্ৰজেশ্বর সেখানে কোন কার্য্যোপলক্ষে উপস্থিত আছেন। তিনি শুনিলেন, শ্রাদ্ধান্তে পুরোহিত মন্ত্র পড়াইলেন— “পিতা স্বৰ্গ: পিতা ধৰ্ম্মঃ পিতাহি পরমস্তপ: | পিতরি প্রীতিমাপম্নে গ্রীয়স্তে সৰ্ব্বদেবতা: ॥” কথাটি ব্রজেশ্বর কণ্ঠস্থ করিলেন। প্রফুল্পের জন্য যখন বড় কান্না আসিত, তখন মনকে প্রবোধ দিবার জন্য বলিতেন— “পিতা স্বৰ্গ: পিতা ধৰ্ম্ম: পিভাহি পরমস্তপ: | পিতরি প্রীতিমাপন্নে প্রয়ন্তে সৰ্ব্বদেবতা: ॥” এইরূপে ব্রজেশ্বর প্রফুল্লকে ভুলিবার চেষ্টা করিতে লাগিলেন। ব্রজেশ্বরের পিতাই যে প্রফুল্লের মৃত্যুর কারণ, সেই কথা মনে পড়িলেই ব্রজেশ্বর ভাবিতেন— “পিতা স্বৰ্গ: পিতা ধৰ্ম্মঃ পিতাহি পরমস্তপ: |" প্রফুল্ল গেল, কিন্তু পিতার প্রতি তবুও ব্রজেশ্বরের ভক্তি অচলা রহিল। পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ প্রফুল্লের শিক্ষা আরম্ভ হইল। নিশি ঠাকুরাণী, রাজার ঘরে থাকিয়, পরে ভবানী ঠাকুরের কাছে লেখা পড়া শিখিয়াছিলেন–বর্ণশিক্ষ, হস্তলিপি, কিঞ্চিৎ শুভঙ্করী আঁক প্রফুল্ল র্তাহার কাছে শিখিল। তার পর পাঠক ঠাকুর নিজে অধ্যাপকের আসন গ্রহণ করিলেন। প্রথমে ব্যাকরণ আরম্ভ করাইলেন। আরম্ভ করাইয়া দুই চারি দিন পড়াইয়া অধ্যাপক বিস্মিত হইলেন। প্রফুল্লের বুদ্ধি অতি তীক্ষ, শিখিবার ইচ্ছা অতি প্রবল— প্রফুল্ল বড় শীঘ্ৰ শিখিতে লাগিল। তাহার পরিশ্রমে নিশিও বিস্মিত হইল। প্রফুল্পর