পাতা:বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস গ্রন্থাবলী (তৃতীয় ভাগ).djvu/৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চন্দ্রশেখর وكاجي إض= iحد ك=ك ধর্মস প্রথম পরিচ্ছেদ দলনী বেগম সুবে বাঙ্গাল, বেহার ও উড়িষ্যার অধিপতি নবাব আলিঙ্গ মীর কাসেম গঁ। মুঙ্গেরের দুর্গে বসতি করেন । দুর্গমধ্যে, অন্তঃপুরে, রঙ্গমস্থলে এক স্থানে বড় শোভা । রাত্রির প্রথম প্রহর এখনও অতীত হয় নাই । প্রকোষ্ঠমধ্য, সুরঞ্জি ন্ত হুৰ্ম্ম তলে, সুকোমল গালিচা পাত । রজত দীপে গন্ধতৈলে জালিত আলোক জলিতেছে । সুগন্ধ কুসুমদামের ভ্রাণে গৃহ পরিপূরিত হইয়াছে ! কিভাবের বালিসে একটি ক্ষুদ্র মস্তক বিষ্ঠস্ত করিয়! একটি ক্ষুদ্রকার বালিকাকৃতি সুৱৰ্তী শয়ন করিয়া গুলেস্ত পড়িবার জন্য যত্ন পাইতেছে । যুবতী সপ্তদশবর্ষীয়, কিন্তু খৰ্ব্বাকৃত, বালিকার ন্যায় সুকুমার ! গুলেস্ত পড়িতেছে, এক একবার উঠিয়া চাহিয়া দেখিতেছে এবং আপন মনে কতই কি বলিতেছে । কখনও বলিতেছে, “এখনও এলেন না কেন ?" আবার বলিতেছে, “কেন আসিবেন ? হাজার দাসীর মধ্যে আমি এক জন দাসী মাত্র, আমার জন্য এতদূর আসিবেন কেন ?" বালিকা আবার গুলেস্ত পড়িতে প্রবৃত্ত হুইল । আবার অল্পদুর পড়িয়াই বলিল, “ভাল লাগে না । ভাল, নাই আমুন, আমাকে স্মরণ করিলেই ত আমি ষাই । তা আমাকে মনে পড়িবে কেন ? অামি হাজার দাসীর মধ্যে এক জন বৈ ত নই।" আবার গুলেস্ত। পড়িতে আরম্ভ করিল, আবার পুস্তক ফেলিল, বলিল, “ভাল, ঈশ্বর কেন এমন করেন ? এক জন কেন আর এক জনের পথ চেয়ে পড়িয়া থাকে ? যদি তাই ঈশ্বরের ইচ্ছা, তবে যে যাকে পায়, সে তাকেই চায় না কেন ? যাকে না পায়, তাকে চায় কেন ? আমি লত হইয়া শালবৃক্ষে উঠিতে চাই কেন ?” তখন পাপীয়সী যুবতী পুস্তক ত্যাগ করিয়া, গায়োখান করিল , , নির্দোষ গঠন ক্ষুদ্র মস্তকে লম্বিত ভুজঙ্গরাশিতুল্য নিবিড় কুঞ্চিত কেশভার ছলিল –স্বর্ণ-খচিত সুগন্ধবিকীর্ণকারী: উজ্জল উত্তরীয় ছলিল—তাহার অঙ্গসঞ্চালনমাত্র গৃহমধ্যে যেন রূপের ত ঈ উঠিল। অগাধ সলিলে যেমন চাঞ্চলামাত্রে তরঙ্গ উঠে, তেমনি তরঙ্গ উঠিল । তখন সুন্দরী এক ক্ষুদ্র বীণা লইয়া তাহাতে ঝঙ্কার দিল এবং ধীরে ধীরে, অতি মৃদুস্বরে গীত আরম্ভ করিল—খেন শ্রোতার ভয়ে ভীত হইয়া গায়িতেছে । এমন সময়ে নিকটস্থ প্রহরার অভিবাদন শব্দ এবং বাহুকদিগের পদধ্বনি হাইরি কর্ণ-রন্ধে প্রবেশ করিল। বালিকা চমকিয় উঠিয়া, বাস্ত হইয়। দ্বারে গিয়৷ দাড়াইল। দেখিল, নবাবের তাঞ্জাম । নবাব মীর কাসেম আলি গঁ। তাঞ্জাম হইতে অবতরণ পূৰ্ব্বক এই গৃহমধ্যে প্রবেশ করিলেন। ora নবাব আসন গ্রহণ করিয়৷ বলিলেন “দলনী বিবি, কি গাত গায়িতেছিলে ?" যুবতীর নাম বোধ হয়, দৌলত উল্লিস, নবাব তাঁহাকে সংক্ষেপার্থ ‘দলনী’ । বলিঙেন। এ জঙ্গ পৌরজন সকলেই “দলনী বেগম” ৷ বা “দলনী বিবি” বলিত । দলনা লজ্জাবনতমুখী হইয়। রহিল। দলনীর দুর্ভাগ্যক্রমে নবাব বলিলেন, “তুমি যাহা গায়িতে : ছিলে, গাও, আমি শুনিব ।" তখন মহা গোলযোগ বাধিল । তখন বীণার তাৱ, অবাধ্য হইল—কিছুতেই স্থর বাধে না । স্ট্রঞ্জ ফেলিয়া দলনী বেহালা লইল, বেহালাও বেস্থর বলিঙ্কে, লাগিল, বোধ হইল। নবাব বলিলেন, “হইয়াছেঃ তুমি উহার সঙ্গে গাও।” তাহাতে দলনীর মনে হইলঃ যেন নবাব মনে করিয়াছেন, দলনীর স্বরবোধ হয়: নাই । তার পর—তার পর, দলনীর মুখও ফুটিল না । দলনী মুখ ফুটাইতে কত চেষ্টা করিল, কিছুতেই মুখ” কথা শুনিল না—কিছুতেই ফুটিল ন! ! মুখ ফোটে