পাতা:গল্পাঞ্জলি.djvu/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাল্যবন্ধু ఫి নলিনী বলিল—“আমি দালালী ব্যবসা করে বা কিছু উপার্জন করব বিপিনদী,—সমস্তই এই ঋণশোধ করব । সংসারখরচ আমি বাড়ী দুখানার ভাড়া থেকেই চালিয়ে নেব । যেমন করে হোক আমার ত খুব আশী হয়, বছর তিন হলেই টাকাটা শোধ হয়ে যাবে । তবু আরো দুটো বছর হাতে রাখলাম। নাঃ–এবার আমার খুব শিক্ষা হয়েছে। শিক্ষা যার নাম—ঠেকে শিখলাম দাদা—ঠেকে শিখলাম। মদ আমার কাছে আজ থেকে গোরক্ত ব্ৰহ্মরক্ত। নাক-থৎ কাণমলা—যদি আমি আর মদের ত্ৰিসীমানায় যাই । যে রাস্তায় মদের দোকান সে রাস্তা দিয়েই নলিনী শৰ্ম্মী আর হাটবেন না । আর এক পেয়ালা চা হুকুম কর।” সপ্তাঙ্গ মধ্যেই সমস্ত ঠিকঠাক হইয়া গেল। দলিলাদিও রেজিষ্ট্রী দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ পাঁচ বৎসর অতীত হইয়া গিয়াছে । বউবাজারে একটি গলির ভিতর নাতিবৃহৎ একখানি দ্বিতল অট্টালিকা, ইহা নলিনীর পৈত্রিক বাস ভবন। পৌষমাস, বেলা নয়টা বাজিয়াছে। উপরতালার একটী কক্ষে তক্তপোষের উপর মলিন ছিল্লশয্যায় নলিনীর স্ত্রী হেমাঙ্গিনী তাহার পীড়িত শিশুপুত্রটিকে কোলে করিয়া বসিয়া আছে। গায়ে ছিটের দোলাই বাধিয়া একটি নয়বৎসরের বালিকা কক্ষখানির সৰ্ব্বত্র চঞ্চলভাবে ঘুরিয়া বেড়াইতেছে, এবং মাঝে মাঝে মার কাছে আসিয়া বলিতেছে—“কি খাব ?”