পাতা:গল্পাঞ্জলি.djvu/১৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՏեՀ গল্পাঞ্জলি কতক নৌকাপথে, কতক গোরুর গাড়ীতে, কতক পদব্রজে আসিতে হইয়াছিল । সঙ্গে কেবলমাত্র একটি ক্যান্বিশের ব্যাগ এবং একটি পিতলের ঘটী ছিল। সহায় সম্পত্তি কিছুই ছিল না । মাসিক তেরে সিকায় একটি বাসা ভাড়া লইয়া, নিজ হাতে রাধিয়া খাইয়া, মোক্তারী ব্যবসায় আরম্ভ করিয়া দেন। এখন সেই জয়রাম মুখোপাধ্যায় পাক৷ দালান কোঠা করিয়াছেন, বাগান করিয়াছেন, পুকুর কিনিয়াছেন, অনেকগুলি কোম্পানির কাগজও কিনিয়াছেন । যে সময়ের কথা বলিতেছি, তখন এ জেলায় ইংরাজিওয়ালা মোক্তারের আবির্ভাব হইয়াছে বটে—কিন্তু জয়রাম মুখুর্যোকে তাহার কেহই হটাইতে পারে নাই । তখনও ইনি এ জেলার প্রধান মোক্তার বলিয়া গণ্য । মুখোপাধ্যার মহাশয়ের হৃদয়থানি অত্যন্ত কোমল ও স্নেহপ্রবণ হইলেও, মেজাজটা কিছু রুক্ষ। যৌবনকালে ইনি রীতিমত বদরাগী ছিলেন —এখন রক্ত অনেকটা ঠাও হইয়া আসিয়াছে। সে কালে, হাকিমের একটু অবিচার অত্যাচার করিলেই মুখুৰ্য্যে মহাশয় রাগিয়া চেচাইয়া অনৰ্থপাত করিয়া তুলিতেন। একদিন এজলাসে এক ডেপুটির সঙ্গিত ইহঁার বিলক্ষণ বচসা হইয়া যায়। বিকালে বাড়ী আসিয়া দেখিলেন তাহার মঙ্গলা গাই একটি এড়ে বাছুর প্রসব করিয়াছে। তখনই আদর করিয়া উক্ত ডেপুটিবাবুর নামে বাছুরটির নামকরণ করিলেন। ডেপুটিবাবু লোকপরম্পরায় ক্রমে এ কথা শুনিয়াছিলেন, এবং বলা বাহুলা, নিতান্ত প্রীতিলাভ করেন নাই। আর একবার, এক ডেপুটির সম্মুখে মুখুর্য্যে মহাশয় আইনের তর্ক করিতেছিলেন, কিন্তু হাকিম কিছুতেই ইহার কথায় সায় দিতেছিলেন না। অবশেষে রাগের মাথায় জয়রাম ৰলিয়া বসিলেন—“আমার স্ত্রীর যতটুকু আইন-জ্ঞান আছে, হুজুরের তাও নেই দেখছি।” সেদিন, আদালত-অবমাননার জন্ত মোক্তার মহাশয়েরও