পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান «ፃ উত্তর-পশ্চিম কোণে যোগিনীর স্থান। পঞ্চদশ, ত্রয়োবিংশ, ষষ্ঠ আর ত্রিশে। নিশ্চয় যোগিনী থাকে উত্তর দিকেতে । চতুর্দশ, বিংশ, সপ্ত, উনত্রিশেতে। যোগিনী পূৰ্ব্বেতে থাকে জানিও নিশ্চিতে ॥” এখানে কথা হইতেছে যে, ১৬৫২ খৃঃ অঃ হইতে ২৮৫ বৎসরের উৰ্দ্ধকাল নিম্নশ্রেণীর মুসলমানেরা এই পুস্তক পড়িয়া আসিতেছে। শুধু তাহাই নহে, চট্টগ্রামে এখন ‘পদ্মাবতী গান করিবার দল আছে। তাহাদের আসর অশিক্ষিত জনসাধারণের মধ্যে বেশ জমিয় উঠে । পুস্তকখানি লিখিত হইয়াছিল আরাকানে এবং তথাকার রাজ-দরবারে ইহ। ব্যাপকভাবে গীত হইত। দেশভাসা’য় লিখিত হওয়ায় উহ। মগ, বৌদ্ধ ও মুসলমান জনসাধারণের তুলারূপ উপভোগ্য হইয়াছিল। এতদ্বারা কি ইহা বুঝা যায় না যে, যে-দেশের জনসাধারণ এই কাব্যখনির এতটা রস-বোদ্ধা ছিল, তাহারা এরূপ একখানি সংস্কৃতাত্মক কাব্য বুঝিতে পারিত । শ্রোতার নিরক্ষর হইলেও কিছু আসে যায় না। কিন্তু বংশপরম্পরা যদি কোনরূপ শিক্ষা দেশময় প্রচলিত থাকে, তবে সৰ্ব্বসাধারণ মোটামুটি পণ্ডিতী-লেখ বুঝিতে পারে। এই দেশে পূৰ্ব্বে যাত্রার গানে বেরূপ সমাস-বহুল পদ সাধারণ লোক বুঝিতে পারিত, তাহা বিস্ময়কর। কাশদাসী মহাভারত বুঝিতে না পারে, এমন হিন্দু নিম্নশ্রেণীর মধ্যেও বিরল । অথচ ইহাতে—“অগ্নি অংশু যেন প্রাংশু আচ্ছাদিল মেঘে”, “ভুজযুগ নিন্দি নাগে আজামু লম্বিত”, “চলৎ চপলারূপে কিবা বর কায়া !”, “দ্বিকর কমল, কমলাংখ্রিতল” “নিষ্কলঙ্ক ইন্দুজ্যোতি, পানঘনত্তনী”—প্রভৃতিরূপ লেখার ছড়াছড়ি । দৌলত কাজি ও আলোয়াল প্রভৃতি কবির পুস্তকগুলির আরাকান ও