পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ట్రల প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান এবং একজন মৌলবী তাহার তথাকথিত বাঙ্গলা রচনায় আমাদের ভাষার যে দুৰ্গতি করিয়াছেন, তাহার নিম্নলিখিত দুইটি অদ্ভুত দৃষ্টান্ত পাশাপাশি রাখিয় দেখিলে আপনারা বুঝিবেন যে, অতিশয় পাণ্ডিতো মানুষের বুদ্ধিলোপ পায় । মৃত্যুঞ্জয় লিখিয়াছেন—“অনভিব্যক্ত বর্ণধ্বনি মাত্র রাজা পরানামী ভাষা প্রথম যেমন কুমারদেব ভাষা । তদনন্তর বর্ণমাত্র। পশুন্তী নামক যেমন প্রাপ্ত কিঞ্চিদ্বয়স্ক বালক-বাণী । তৎপর পদমাত্রাত্মক মধ্যমবিধা ভাষা যেমন পূৰ্ব্বোক্ত বালকাধিক কিঞ্চিদ্বয়স্ক শিশুভাষ। তৎপর বৈখরী নামধেয়। সকল শাস্ত্র-স্বরূপ। বিবিধ জ্ঞান-প্রকাশিক সৰ্ব্বব্যবহার প্রদর্শিক চতুর্গা ভাষা যেমন লৌকিক শাস্ত্রীয় ভাষা । ঈদৃশরূপে জাতমাত্র বালকের উত্তরোত্তর বয়োবৃদ্ধি-ক্রমে ক্রমশঃ প্রবর্তমানত্ব রূপে যদ্যপি প্রতীয় মানা হউন তথাপি পূৰ্ব্বোক্ত পরা পশুন্তী মধ্যম বৈখরী রূপ চতুৰ্বাহরূপে বর্তমান আছেন ।” মুসলমানী-বাঙ্গল বলিয়া এক প্রকার উৎকট বস্তু বাঙ্গল সাহিত্যের এক কোণে একটা বিরাট পাথরের স্তুপের মত পড়িয়া আছে। তাহার ভাবাৰ্থ মৌলবীরা বুঝিবেন । বাঙ্গালী হিন্দু-মুসলমান তাহাদের মাতার মুখে যে ভাষা শুনিয় কথা বলিতে শিখিয়াছেন, এ ভাষা তাহা নহে । ইহার একটি উদাহরণ দিতেছি—“সাহােজাদি সখি সোনা সোনার মধ্য হইতে পয়দ হইবার বিবরণ, উজির নন্দনের মানিক পয়দ হইবার বয়ান, বাদসাহ ও উজির ফরজন্দের মুখ দেখিয়া পুসির মজলেছ করে এবং পীরের দোয়ায় মাণিক জিন্দা হয় ও দোবার মালিনীর হাতে আফতে গিরিবার বয়ান * * ১৮১৪ খৃষ্টাব্দে অথবা তৎসন্নিহিত কোন বৎসর রাণী কালিন্দী চক্‌ম-রাজ ধরম বক্স-এর সঙ্গে পরিণত হন, এই ধরম বক্স হিন্দুধৰ্ম্মের মোহাম্মদ কোরবান আলী কুত—মণী সেন" ।