পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/১২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ꮌ Ꮌ 8 প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান কখনও কখনও জামায়েতুল্লা হিন্দুদের আচার-ব্যবহারের উপর একটু বিদ্রুপের শর হানিয়াছেন, কিন্তু এই কটাক্ষকে শর বলিতে আপত্তি নাই ; ইহা ফুলশর — ইহাতে তীব্রত বা খোচা নাই। স্ত্রী-আচার অনুসারে বঙ্গের কোন কোন পল্লীতে ইদুরের মাটী দিয়া মাতৃ-ঋণ শোধ করিতে হয় । এই উপলক্ষে কবি বলিতেছেন— “সেখ বয়াতি জামায়েতুল্লা হাইস হাইসা কয়। কথা শুইলা দুঃখে মরি এইবা কি আর অয়। মায়ের বুকের এক ফোটা দুধ হয় মা ঋণ। দুনিয়ার কেহ নারে শুঝবার সেই ঋণ ॥ হেন্দুর শাস্ত্র, মহা শাস্ত্র, এই কথা কি খাটি। বেবাক ঋণ শুইঝা গেল দিয়া এন্দুর মাট ॥” আমরা এই পালাটি সম্বন্ধে বেশ কিছু লিখিব না ইহা অসম্পূর্ণ হইলেও যে-সকল দৃশুপটের মধ্যে দ্রুতগতি ছবিগুলি চোখে ধাধা দিয়া চলিয়া যায়-- ইহার নর-নারীর চরিত্র ও ঘটনাগুলি সেইরূপ ক্ষণেকের জন্ত মনের উপর দাগ রাখিয়া চলিয়া যায়। দৃশুগুলি অতি স্পষ্ট, তাহাদের পরিকল্পনা কোনরূপ আয়াস-সস্তৃত নহে । এ-যেন রৌদ্রোজ্জল নীল আকাশের নীচে—যে আলো ও ছায়ার বাস্তব খেলা চলিয়াছে, তাহ। আলো-চিত্রে রূপায়িত করিয়া অতি সহজে কেহ ধরিয়া রাখিয়াছেন। এই অসম্পূর্ণ কাব্য বাঙ্গালার পল্লী-জীবনের যে ছন্দ দেখাইয়াছে, তাহাতে বাঙ্গালার সৰ্ব্বংসহ, মেহাতুরা, ধৰ্ম্ম প্রাণ মাতার ছবি ফুটিয়া উঠিয়াছে। রূপসীর চোখে ধাধা দেওয়া সৌন্দৰ্য্য, তাহার প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব, উদ্ভাবনী শক্তি, উপস্থিত বুদ্ধি ও দোষ-গুণের বিচার-রহিত দাম্পত্য-প্রেম এবং অভীষ্ট সিদ্ধির জন্ত যে-কোন উপায় অবলম্বনে প্রস্তুত নারী-প্রতিমা গড়িয়া উঠিয়াছে । বাহ-প্রকৃতির নদ-নদী-সস্কুল অরণ্য ও গিরিপথ এবং পল্লী