পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/১৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান 〉 R> বহু ধন-দৌলত লইয়। আমির গুহে ফিরিয়া আসিয়া বিভলাব নিকট শুনিতে পাইল যে, ভেলুয়া তিন দিন পূৰ্ব্বে মারা গিয়াছে এবং নদীর তীরে তাহাকে কবর দেওয়া হইয়াছে। কবর খুড়িয়া আমির একটা কালো কুকুরের শব পাইল । তারপর আমির বিরাগী হইয় গৃহত্যাগ করিল । কত অনশন, কত ঝড়-বৃষ্টি, কত বিপদ ও অনিদ্র সহ করিয়া আমির কুড়ালমুড গ্রামে র্কাইচে। নদীতে বাপাইয়া পড়িয়া স্রোতের টানে কাউখালির পাক পার হইয়া ইচ্ছামতীর মুখে পৌছিল, তথা হইতে রাগন্ত ছাকলার মধ্যে সৈয়দনগর নামক গ্রামে পৌছিল । তখন তাহার দেহ মলিন, জীণ-বাসে কটি ঘের মাথায় জটা—এইভাবে সে টোনা বারুইয়ের সারঙ্গের বাদ্য শুনিয়। মুগ্ধ হইল এবং তাহাকে তাঙ্গর সমস্ত কথ। করুণ-স্বরে কাদিতে কাদিতে বর্ণনা করিল । টোনা বারই তাহাকে সাক্রেদ করিয়া সারঙ্গ-বাদ্য শিখাইল এবং একটা নুতন সারঙ্গ তাহাকে উপহার দিয়৷ ‘ভেলুয়া’ নামটিতে তাহার স্বর বাধিয়া দিল । আমির ‘ভেলুয়া’ নামে-সাধ। সারঙ্গ বাজাইয়া পাগলের ন্তায় পল্লী হইতে পল্লীতে, দূর-দূরান্তরে একটা ঘূর্ণাবর্তের ন্তার ঘুরিতে লাগিল। মসলী বন্দরে যাইয়া সে ভোলার বাড়ীর কাছে সারঙ্গ বাজাইতে লাগিল। ভেলুয়া প্রাসাদের উচ্চ-তল হইতে সারঙ্গ-বাদককে দেখিয় তাহার শত পরিবর্তন-সত্ত্বেও চিনিতে পারিল । সে ভোলার নামে মুনাপ কাজির কাছে নালিশ করিল। মুনাপ কাজির বয়স ৯ বৎসর এবং সে অতি লম্পট। ভোলা ভেলুয়াকে অনেক রূপ শিখাইয়। দিয়াছিল। তথাপি কাজির আদালভে ভেলুয়৷ ভোলার সমস্ত কীৰ্ত্তির কথা অশ্র-বিগলিত চক্ষে বর্ণনা করিয়া নিজ স্বামীর পরিচয় দিল । কাজি—ভোলাকে দূর করিয়া দিয়া স্বয়ং ভেলুয়াকে অধিকার করিবার চেষ্টা পাইলেন। তিনি আমিরকে বলিলেন— “তোমার যোগ্য নয় ভেলুয়া কহিলাম সার। আর একজন লুটি নিলে আসিবে আবার ॥