পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/১৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

У 8 o প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান সমস্ত ফৌজ সখিনার সঙ্গে চলিল। সখিনার তখনকার অবস্থা বর্ণনা করিয়া কবি লিখিয়াছেন— “মরণ-ঠাটা পড়িল যেন গোলাপের বাগে । মিলাইল মুখের হাসি, পরাণে দাগ লাগে।” আড়াই দিন পর্য্যন্ত সম্রাট বাহিনীর সঙ্গে ছদ্মবেশিনী সখিনার যুদ্ধ চলিল। এই সময়ের মধ্যে সখিনা কতশত বাণ ও গোলার সম্মুখীন হইয়া এক মুক্তত্তের জন্তও ঘোড়া হইতে অবতরণ করেন নাই । পিতার প্রতি ক্রোধে তিনি রাজপ্রাসাদ জালাইয়া দিয়া মহামারী করিতে লাগিলেন । সমাটু-সৈন্ত পরাস্ত হইয়। ছত্রভঙ্গ হইল। দৃঢ়-সঙ্কল্পিত বাহুতে অসি ধারণ করিয়। কাঞ্চণ প্রতিমা সখিন। অশ্ব-পৃষ্ঠে স্বামীর সঙ্গে মিলনের স্বপ্ন দেখিতেছিলেন, এমন সময় ওমর খার শিবির হইতে ফিরোজ খার পত্র লইয়। লোক আসিল—“কে আপনি দরদী, জঙ্গলবাড়ীর পক্ষ লইয়। এরূপ অদ্ভুত যুদ্ধ করিতেছেন ? কিন্তু আর যুদ্ধের দরকার নাই। ফিরোজ শাহু মোগল-সরকারের সমস্ত বাকি রাজস্ব দিয়া সন্ধি করিয়াছেন, তিনি বিবাদের মূল সখিনাকে তালাক দিয়াছেন । ওমর খার সঙ্গেও তাহার তার কোন বিবাদ নাই, আপনি যুদ্ধ ক্ষান্ত করুন ।” এক মুহূর্তে স্বামীর স্বহস্তে লেখা ‘তালাকনামা’খানি দেখিলেন, স্বামীর পাঞ্জা দেখিয় তিনি চিনিলেন— “তালাকনাম। পড়ে বিবি ঘোড়ার উপরে। সাপেতে দংশিল যেন বিবির যে শিরে । ঘোড়ার পৃষ্ঠ হৈতে বিবি ঢলিয়া পড়িল । সিপাই লস্কর যত চৌদিকে ঘিরিল। শিরে বান্ধ সোনার ভাজ ভাঙ্গ্য হৈল গুড়া। রণস্থলে তারে দেইখা কঁাদে দুলাল ঘোড়া ।