পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/১৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

)( 8 প্রাচীন বাঙ্গল সাহিত্যে মুসলমানের অবদান কবির মাতৃভাষার উপর অদ্ভুত আধিপত্য, যা কিছু বলিতে চাহিতেছেন – তেমনি জোরের ভাষায় পর পর উপমা দিয়া ব্যক্ত করিতেছেন। এই গানেও হাৰ্ম্মাদ দস্যদের ভীষণ উৎপীড়নের কথা অতর্কিত ভাবে জালিয়াগণ কর্তৃক তাহাদের চক্ষে মুষ্টি মুষ্টি লঙ্কার গুড়া-নিক্ষেপ, জল দমু্যদের জাহাজের বর্ণনা, বাণিজ্য-তরি-বাহকদের বৈঠার তালে তালে দ্রুত ছন্দে সারিগান এবং বাণিজ্য-সংক্রান্ত কত কৌতুহলোদ্দীপক কথাই ন৷ আছে । গানটি কবিতার একটি বাগান বলিলেও অত্যুক্তি হয় না। কিন্তু নানা বিচিত্র ঘটনা ও দৃশ্বের বর্ণনা ছাপাইয়| উঠিয়াছে—মালেক ও নুবুন্নেছার প্রেম-বদ্ধ সুবর্ণ-মুৰ্বি খেজুবাহু মন্দিরের স্তম্ভে যে-সকল প্রস্তরের অনিন্দ্য সুন্দর প্রণয়-মুক্তি দেখিয়াছিলাম এই যুগল-মূৰ্ত্তি তেমনই সুন্দর, চোখের তৃপ্তি এবং আনন্দের প্রদীপ। এই গীতিকার গল্পের বাধুনি এমন চমৎকার যে—আধুনিক কালের কোন শ্রেষ্ঠ ঔপন্যাসিক তাহা হইতে ভাল কিছু করিতে পারিতেন ন আর কোন গীতিকার কথা ছাড়িয়া দিলেও এই নুরস্নেহ ও কবরের কথা’ প্রথম শ্রেণীর উপন্যাসের পংক্তিতে স্থান পাইবে । ইহ। প্রায় আড়াইশত বৎসরের প্রাচীন, অথচ এদিকে আমরা আধুনিক গল্পগুলিকে বাঙ্গল উপন্যাসের জনক বলিয়া বাগাড়ম্বর করিতেছি । ঘটনা-বৈচিত্র্যে চরিত্র-সৃষ্টিতে এবং মূল-আখ্যায়িকটি কেন্দ্রীভূত করিবার কৌশলে এই গীতিকার মত আর কয়খানি পুস্তক বাঙ্গলায় আছে তাহ জানিনা, তবে ইহা কবিতায় লেখা । ৯ । ‘দেওয়ানা মদিনা’ নামক আর একটি গীতিকার কথা বলিয়। আমরা এই অধ্যায়ের শেষ করিব। গাথা সাহিত্যের পুষ্প-বনের মধ্যে এই গীতিক পদ্মরাণী—ইহার তুলনা নাই। 'দেওয়ানা মদিনা গীতিকার কথা আমি ইসলামিয়া কলেজে আহুত একটি সভায় বিস্তারিতভাবে লিখিয়৷