পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/১৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> tbr প্রাচীন বাঙ্গল সাহিত্যে মুসলমানের অবদান এদিকে সুরুজকে প্রত্যাখ্যান করার পর হইতে তীব্র অনুতাপে দুলালের হৃদয় বিদীর্ণ হইতে লাগিল। কতকালের কত স্নেহ-কথা ও সুরুজের স্নানমূৰ্ত্তি মনে হুইয়া তাহার হৃদয় খাক হইয় গেল—ধন-সম্পত্তি, রাজপদ তাহার তুচ্ছ মনে হইতে লাগিল। সে কাহাকেও না বলিয়। কোন সঙ্গী না লইয়। মদিনার উদ্দেস্যে স্বীয় পুরাতন কুটারে উপস্থিত হইল এবং মদিনার কবরের কাছে ডের বাধিয় ফকির-স্বরূপ জীবনের অবশিষ্টকাল যাপন করিল। এই গীতিকাটি অতি সংক্ষেপে কথিত হইল। ইহার গল্পভাগ তেমন জমাট বাধে নাই ইহার প্রথম দিকটা অনেকট একট। প্রাচীন উপকথা, —বিমাতার সড়যন্ত্রের কাহিনীও কতকটা সেই উপকথার অংশ। কিন্তু বিমাতাকে কবি যেরূপে অঙ্কন করিয়াছেন তাহাতে তাঙ্গার নারী-চরিত্রের ছলন ও মনস্তত্ত্ব বিশ্লেষণের অপূৰ্ব্ব ক্ষমতা প্রদর্শিত হইয়াছে। যে রঙ্গীন রাজকীয় ডিঙ্গিতে আষাঢ় মাসের নূতন জলের মধ্যদিয়া কুমারদ্বয়কে মধাগাঙ্গে নেওয়া হইয়াছিল, তাহার বর্ণনাটি চমৎকার। যে-ভাবে বিমাতা কুমারদের ও তাহাদের বিশ্বাস উৎপাদন করিয়াছিল, তাহার বর্ণনায় লেখক বিলক্ষণ কাব্য-প্রতিভা দেখাইয়াছেন । কিন্তু এই অংশ শেষাংশের সহিত জুড়িয়া দিয়া কবি কাহিনীটিকে বৃথা দীর্ঘ করিয়াছেন। প্রকৃত গল্প আরম্ভ হইয়াছে আলালের সঙ্গে সেকেন্দর বাদ শাহের সাক্ষাৎ ও দুলালের সঙ্গে আলালের পুনর্মিলনের সময় হইতে। দুলাল তালাকনাম দিয়া চলিয় গেলে মদিন তাহা বিশ্বাস করে নাই— “তালাকনাম যখন পাইল মদিন সুন্দরী। হাসিয়া উড়াইল কথা বিশ্বাস না করি ॥ আমার খসম মোরে লা ছাড়িবে পরাণ থাকিতে । চালাকি করিল মোরে পরখ করিতে ॥