পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/২০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচীন বাঙ্গল সাহিত্যে মুসলমানের অবদান معاهج ولا এই গীতিকাগুলির মধ্যে হিন্দু-মুসলমানের শ্রেণী-ভেদের উপর কোন জোর দেওয়া হয় নাই। মুসলমান কবিদের অনেকেই নিরঞ্জনের বন্দন৷ করিয়া পুস্তক আরম্ভ করিয়াছেন । পীরগণের বন্দন ও মক্কা-মদিন প্রভৃতি তীর্থের গৌরব-ঘোষণার ব্যাপদেশে এই কবির সময়ে সময়ে কাশী ও বুন্দাবনের বন্দনা করিয়াছেন। কেহ কেহ সপ-দেবতা পদ্মাকে এবং পাতালে সপ্তকোটি নাগ-নারায়ণকে শ্রদ্ধা জানাইয়াছেন। একজন মুসলমান কবি সীতা দেবীকে নমস্কার করিয়াছেন, আর একজন ঠাকুর জগন্নাথকে বন্দনা করিয়াছেন। একজন মুসলমান কবি চাষখোলা গ্রামের বুড়া মাকে প্রণাম করিয়াছেন। তাহার হজরত মোহাম্মদ, মহাত্মা আলি প্রভৃতির বিস্তৃতভাবে বন্দনা করিয়া সঙ্গে সঙ্গে হিন্দুদের শ্রদ্ধেয় তীর্থ ও ঠাকুরদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনে ক্রটি করেন নাই। মুসলমান কবিদের এই বন্দনাস্থচক মুখবন্ধে আর একটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখযোগ্য, কেহ কেহ স্বীয় পল্লীকেও নমস্কার করিয়াছেন। দেশমাতৃকার প্রতি ভক্তি এই কৃষক-জনসাধারণের একটা বিশেষ স্বতঃসিদ্ধ মনোভাব। অনেক মুসলমান কবিই পৰ্ব্বত-শ্রেষ্ঠ হিমালয়কে বন্দনা করিয়াছেন। মোহাম্মদ ইউনুস কৃত চৌধুরীর লড়াই-এর একটি বন্দন আছে । এই দীর্ঘ বন্দনা-পত্রের অনেকটা বাদ-সাদ দিয়! উদ্ধৃত করিতেছি— “পশ্চিমে বন্দিয়া গাই মক্কা আদ্য স্থান। উদ্দেশে সেলাম জানাইলাম হিন্দু-মুসলমান। হাসেন হুসেন বন্দুম রচুলের নাতি।” 米 - “মক্কার পূৰ্ব্বেত বন্দি ঠাকুর জগন্নাথ। আচার লাই বিচার লাই বাজারে বিকায় ভাত । এমন সুধম্ভ জায়গা জাতি নাহি যায়। চণ্ডালেতে রাধে ভাত ব্রাহ্মণেতে খায়।