পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/২০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ᎼᎽb← প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান একবার বলিয়াছি। কতকগুলি গীতিকায় দেখা যায়—হিন্দু ও মুসলমান পরস্পরের সঙ্গে মিশিয়া যাইবার নানারূপ আয়োজন করিতেছে। কালুগাজি ও চম্পাবতী’র কাব্যে কবি গঙ্গাকে গাজীর মাসীমাতা বলিয়া বর্ণনা করিয়াছেন, অথচ স্বীয় ধৰ্ম্মমত প্রচারের আগ্রহ ছাড়েন নাই। মুসলমান সাধু এক হিন্দুকে গঙ্গা দেখাইবার লোভ প্রদর্শন করিয়া বলিতেছেন— “করাইতে পারি যদি গঙ্গর দর্শন। হৈবা কিনা মুসলমান করহ স্বীকার ॥” একখানি কাব্যে এক মুসলমান রমণীকে জিন্দাপীর বৈষ্ণবী সাজিতে উপদেশ দিয়া গজনী সহরে যাইতে বলিতেছেন— “শীঘ্ৰ কন্যা, যাও মাগো, বৈষ্ণবী সাজিয়া । সেভাবি চলিয়া যাও গজনীর সহর বুল্য। গজনীর সহরে গেল স্থলেভার নারী । হাতে লোটা তিলক-ক্টোটা বৈষ্ণবীর বেশ ধরি ॥” ‘হরিদাসের পালা’ জনৈক মুসলমান কবির লেখা। কবির নাম খলিলুর রহমান, ময়মনসিংহের সরিষাপুরে তাহার বাড়ী ছিল। এই কাব্যে দেখা যায়—“এক মুসলমান রাজপুত্ৰ সৰ্ব্বদা হরিনাম করাতে তাহার পিতা ক্রুদ্ধ হইয়া তাহাকে হত্যা করিবার জন্ত জলোদকে হুকুম দিতেছেন এবং নানারূপ নিৰ্ম্মম অত্যাচার করিতেছেন। ভগবানের কৃপায় প্রতিবারেই রাজকুমার বিপদ হইতে উদ্ধার পাইতেছেন।” মুসলমান কবি যে রাজকুমারকে প্রহ্নাদ সাজাইয়া তাহার ভক্তির অসামান্তত্ব প্রমাণ করিতে চেষ্টা পাইতেছেন, তাহাতে সন্দেহ নাই । ‘মনাই যাত্রা’ একখানি রূপক কাব্য, মুসলমানের লেখা । ইহাতে মন আধ্যাত্মিক-পথের যাত্রীস্বরূপ বর্ণিত হইয়াছে। ইহাতে চারি ফেরেশতাকে শরীরের চারি পীর এবং চারি বেদকে তাহার চ্ছেদ বলা হুইয়াছে। এই গীতিকা কতকটা ‘প্রবোধ চন্দ্রোদয়’ নাটকের ছাচে ঢালা। এই সকল গোজামিলের চেষ্টায়