পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/২১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२ ०br প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান তাহাদের বাসি হইবার সম্ভাবনা নাই। রচনার দিন তাহারা যে স্বভ্রাণ দিয়াছেন, এখনও তাঁহাদের সেই স্বস্ত্ৰাণ আছে। তাহাদের মধ্যে বাঙ্গাল দেশের কোকিলের ডাক, বর্ষাকালের কেয়াফুলের ঘ্রাণ ও বসন্তের মলয় সমীরণ সকলই আছে। তাহার খাটি বাঙ্গালার জিনিষ, এই দেশের শোভা, সমৃদ্ধি। সম্প্রতি আশুতোষ চৌধুরী মজুনা’ নামক একটি গীতিকার সন্ধান দিয়াছেন। তিনি রায়বাহাদুর খগেন্দ্রনাথ মিত্র মহাশয়কে উহ পাঠাইয়া আমাকে লিখিয়াছিলেন। এই গীতিকায় সায়েস্তাখার পুত্ৰ বুজাগা উমেদ খার নেতৃত্বে মগদের সঙ্গে মোগল-সৈন্তের যে ঘোরতর নৌ-যুদ্ধ হয়, তাহার বর্ণনা আছে। বর্ণনাটি পড়িলে মনে হয়, যেন উহ। কবির চাক্ষুষ ঘটনা। কবির নাম নাই, কিন্তু বন্দনাটি পড়িলে তিনি যে মুসলমান তাহাতে কোন সন্দেহ থাকে না, নায়ক-নায়িক সকলেই মুসলমান । যুদ্ধের বর্ণনা— “সারা দিন যে যুদ্ধ হৈল মগ-মুসলমানে। বেলার শেষে কালা মেঘ উড়ে হাইড়া কোণে ॥ ধীরে ধীরে সেই মেঘ আসমান ছাইল । ঝাপটাইয়া তুফান এক উত্তর থনে আইল। বেবান সাগরে তখন হৈল বিষম হ'ল। চাইর দিকতুন ডাক পৈল ‘সামাল, সামাল ॥ উপরে উঠিছে ঢেউ আকাশ বরাবর। নীচেরদিকে পড়ে যেন পাতালের ভিভর ॥ বিজুলী ঠাটার ডাকে আসমান ভাইঙ্গ পড়ে। রণবাদ্য থামি গেল শঙ্খমুখের চরে। পরাণের লালসে মগে ডাকে করা, ফরা।* এইবার নিরঞ্জন সঙ্কটেতে ভরা ॥