পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/২২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নবম পরিচ্ছেদ শেষ কথা এই পল্লী-গীতিকার জগৎ আমার চক্ষে একরূপ স্বপ্নে-পাওয়া সাম্রাজ্য, এই খনি কালিফৰ্ণিয় ও গোলকুণ্ডার রত্ন-খনি অপেক্ষ আমার চক্ষে মূল্যবান । পল্লী-গাথার কবি হিন্দুও আছেন, মুসলমানও আছেন, কিন্তু তাহাদের স্বল্প নর-নারীর কোন জাতি নাই, তাহার এক পরিবারের লোক, তাহাদের তিলক, টিকি বা ফেজ নাই, তাহাদের সকলেরই গায়ে এক ছাপ মার—তাহ। প্রেমের চাপ । প্রেমকে আমি তিন-ভাগে বিভক্ত করিয়াছি । প্রথম শ্রেণী—দৈহিক। তাহাতে চুম্বন, আলিঙ্গন ও স্পশাদির জন্ত প্ৰাণ ধড়ফড় করে, দৈহিক তৃপ্তি মিটিলে অনেক সময় তাহার আর কোন সাড়া পাওয়া যায় না, ইহা নিবৃত্তি পাইয়া যায়, ইদৃশ প্রেমে নাভীকুপ হইতে বেণীর লহর পর্য্যন্ত সমস্তই কামের শরাসনের আসবাব-পত্র । ভারতচন্দ্রের ‘বিদ্যাসুন্দর” কালীকৃষ্ণদাসের ‘কামিণী কুমার এবং রসিকচন্দ্র রায়ের ‘জীবন তারা প্রভৃতি পুস্তকে এইরূপ রচনার বহু নিদর্শণ পাওয়া যাইবে। এই শ্রেণীর কোন কোনখানি পুলিশ আইনের আমলে আসিয়াছে। - দ্বিতীয় শ্রেণীর প্রেম--মানসিক ইহা তরুণ বয়সের স্বপ্ন-ঘোর রাজ্যের আবহাওয়ায় ফোটে, খুব জাকাল ভাবেই ফোটে, তখন ইহা ধরাতলে স্বর্গের স্বপ্ন দেখায়, নায়িকার শ্রী আশ্রয় করিয়া বিচিত্র মনোভাবের সুরভি বিতরণ করিয়া ইহা মনের আনাচে-কানাচে আনাগোনা করে—কিন্তু এই স্বপ্নবিলাসী প্রেমের কোন স্থায়ী অবলম্বন নাই, লতা যেমন তাহার পুষ্পের ঐশ্বৰ্য্য লইয়া আজ এ-তরু শাখা, কাল একটা বাশের খটী যাহা কিছু কাছে