পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/২৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নবাগত ২৩৩ তিস্থ না বুঝে হাসলে—হি—হি— এই সময়ে ওদের জ্যাঠাইমা বাড়ীর ছেলেমেয়েকে ডাক দিলেন—ওরে, সবাই এসে কাটাল খেয়ে যা—ও হিমু, পাস্ত ভাত কে কে থাবে ডাক দিয়ে নিয়ে আয়। এক হাড়ি পাস্ত রয়েচে সেগুলো কাটাল দিয়ে ওঠাতে তো হবে | ভাত ফেলতে পারবো না এই যুধ্যের বাজারে— পান্ত ভাত ও কাঠাল পুটির অতি প্রিয় খাদ্য। কিন্তু আজ এখন তার খাবার নাম করবার জো নেই—খিদেও পেয়েছিল, ইচ্ছে করলে সে কলসী থেকে কাঠালবীচি ভাজা আর মুড়ি লুকিয়ে পেড়ে নিয়ে খেতে পারতেী—কিন্তু সে ইচ্ছে তার নেই। তাতে ভগবান রাগ করবেন। আজকের দিনে সে ভগবানকে রাগাবে না । বেলা বাড়লো। ও বাড়ীতে শাক ও হুলুর শব্দ শোনা গেল। অবিশুি খুব কাছে নয় পুটির ভাবী শশুরবাড়ী। তা হলেও শাকের শব্দ আসবার মত দূরও নয়। ওর খুড়তুতো বোন খাম বললে-ওই শোন দিদি, দাদাবাবুর গায়ে হলুদ হচ্চে– পুটি ধমক দিয়ে বললে—চুপ, । মেরে ফেলে দেবো। দাদাবাবু কে ? —বা-রে, হয়েচেই তো—আর ত দুদিন দেরি— —না। তা হোকৃ। আগে থেকে বলতে নেই। —জ্যাঠাইমা তো বলচে । —কি বলচে ? —বলচে, আমাদের জামাইয়ের গায়ে হলুদ হচ্চে—সেখান থেকে তত্ত্ব নিয়ে নাপিত এবার এসে পৌছে যাবে— - —তা বলুক গে। আমাদের বলতে নেই। —আচ্ছা দিদি—দাদাবাবু—ইয়ে স্থবোধবাবু পাশ করেছে ? —খবর এখনও বের হয় নি । —আমি ও পাড়ায় রাধীদের বাড়ী গিইছিলাম এই এটু, আগে। রাধীর দাদা পাশ করেচে, কাল বিকেলে কলকাতা থেকে ওর কাকা খবর দিয়েচে । —তোর দাদাবাবুর—ইয়ে মানে ওর—দুর, ওই কেশববাবুর ছেলের খবর কে পাঠাবে কলকাতা থেকে ? ওদের তো কেউ নেই কলকাতায় । 够 একটু পরে ওদের বাড়ীতে শাক বেজে উঠলো, হুলু পড়লো। নাপিত তত্ত্ব নিয়ে আসচে তেঁতুলতলার পথে, বাড়ী থেকে দেখা গিয়েচে। পুটির বুক আনন্দে ছলে উঠলো—জ্যাঠাইমা বলছিলেন, আশীৰ্ব্বাদ হয়ে গেলেও বিয়ে না হতে পারে, কিন্তু গায়ে হলুদ হয়ে গেলে বিয়ে নাকি আর ফেরে না । এবার তা হোলে সেই আশ্চৰ্য্য ব্যাপারটা তার জীবনে ঘটে গেল। কেউ আর বাধা দিতে পারবে না। পাড়াগায়ে কত রকমে ভাঙচি দেয় লোকে। তন্তু বিয়েতেও ভাঙচি দিয়েছিল। বলেছিল, মেয়ের রং কালো, মুখ-চোখ ভালো না—লেখাপড়