পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/৩২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

पञनांथांब्रअं סגס জগতের ওপারে যে বৃহত্তর স্বপ্ন-জগৎ দিক থেকে দিগন্তরে বিস্তৃত। আমি একটা রঙীন ছবিতে নেপলস উপসাগর তীরে এই ধরনের গাছের ছবি দেখেছিলাম। চট্ৰক গাছগুলো দেখতে ঠিক তেমনি । মনে মনে আমি ওদের নাম দিয়েছিলাম গ্নিনির গাছ। টাকার জন্তে সে গাছগুলো কেটে উড়িয়ে দেবো ? লোকটাকে বললাম—না হে, ও গাছ বিক্রি হবে না। সেই থেকেই কাঠের নৌকা নিয়ে লোকটা আমাদের গ্রামের ঘাটে রয়ে গেল। দু-তিনটি বড় বড় বাগান কিনে তার সমস্ত গাছ কাটিয়ে গুড়িগুলো নৌকা বোঝাই করতে লাগলো-ভালপালা সস্তাদরে গ্রামের লোকজন জালানির জন্যে কিনে নিলে ওর কাছ থেকে । রায়েদের চণ্ডীমণ্ডপটা অনেকদিন থেকে পোড়ো, ভূতের বাসা হয়ে আছে—কারণ একজন বৃদ্ধ ব্যক্তি ছাড়া রায়বাড়ীতে বর্তমানে আর কেউ থাকে না । লোকটী রায়-কাকাকে বলে সেই চণ্ডীমণ্ডপের একপাশে আছে, আরও দুটি সঙ্গী নিয়ে—চণ্ডীমণ্ডপের উত্তর দেওয়ালের গায়ে বাইরের দিকে একখানা খেজুৱ-পাতার চাল উঠিয়ে,নিয়ে সেখানেই রান্না করে খায়। একটা বাঁশের তিকৃড়িতে ছাড়িকুড়ি রাখে । গাছগুলো কেটে ফেলচে গ্রামের ছায়াসম্পদ ও ক্রকে নষ্ট করে—এজন্যে কাঠ-বিক্রি বুড়োকে আমি পছন্দ করতাম না। ওর সঙ্গে বেশি কথাও বলতাম না। নদীর ধারে ওদের নৌকো থাকে, যেখানে নদীর পাড় খুব ঢালু, বড় বড় উলু দ্বাসের বন, ভাট বন, পটুপটি গাছ—সেখানে ওদেরই কাটা এক কাঠের গুড়ির ওপর বলে থাকি বিকেলে, বেশ ফাঁকা জায়গা, অনেক দূর পর্য্যন্ত আকাশ দেখা যায়। নীল আকাশের নিঃশষ বাণীর মত নেমে আসে অপরাহ্লের শান্তি । কাঠ-বিক্রি বুড়ো আমার কাছে আসে নোঁকো থেকে নেমে । আমি বলি—আর কতদিন আছো ? গাছগুলো তো দেশের সাবড়ালে । আমি কি বলচি ও বুঝতে পারে না । গাছগুলো সাবাড় করলে ক্ষতি যে কি, তা ওর বোঝবার বুদ্ধি নেই। ও বললে—না বাবু, কি আর এমন লাভই বা হবে, বড্ড খরচ পড়ে যাচ্ছে । –কিসের খরচ ? —এই জন-খরচ, কাটাই খরচ । —কলকাতায় কি দরে বিক্রি ছে ? 帧 —আজ্ঞে সাড়ে তিন টাকা কিউবিক ফুট। মিথ্যে কথা বলৰো না আপনার কাছে । লোকটা আর কিছু ইংরেজী জামুক আর না জামুক কিউবিক ফুটের মাপটা জানে। কারণ ওই করেই খায় । তাছাড়া ওকে দেখে আমার মনে হয় লোকটা সরল, সাদালিদে। বুলি, ওঁ ব্যবসায়ার নয়। ও আমার তামাক লেজে এক একদিন খাওয়ায়। স্থখদু:খের দুটো কথা বলে । ক্রমে মত দেখি বুড়ে বড় বড় বাগান কেটে উড়িয়ে দিচ্ছে, ততই ওর ওপর আমার বিতৃষ্ণু