পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/৩৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ज्रामीक्षांङ्ग• *३६ টেনে নিয়ে ‘চাদের দেশের রাজকুমারীর কিংবা ‘এবার ফাঙ্কন এলে এসো এলো’র অপুৰ্ব্ব স্বরগুঞ্জে ম্বর ভরিয়ে দেয় । কারণ, যে-বাড়ীতে ওকে নিয়ে গিয়েছিল, একটা ভাঙা হারমোনিয়ম ছিল সে-বাড়ীতে । একটি এগারো-বারো বছরের ছোট মেয়ে বেম্বরে একটা সেকেলে শু্যামাসঙ্গীতও গেয়েছিল—বোধহয় তাকেই বিশেষ করে শোনাবার জন্যেই। এ-গ্রামে কেউ বোধহয় খবর রাখে না যে সে একজন গায়িকা । বাড়ী ফিরে দেখলে, ওর জ। তালের বড় ভাজবে বলে তালেড় রস বার করচে। ওকে দেখে বললে—রাঙা-বোঁকে কোথায় নিয়ে গিয়েছিলে তোমরা ? মেয়ের দল বললে—তুমি তো আর যাবে না বডবোঁদি, তুমি গেলে অবিভি আজ খুব ভালো হোতো । আমাদের সে ভাগ্যি কি আর আছে । নীরদ বললে—বোস সবাই । তালের ফুলুরি খাবি। রাঙা-বোঁ, তুমি তালের গোলাট করে, আমি কড়ায় তেল চড়িয়ে हेि | একটি ধাম বড় ভেজে যখন ওরা উঠলো তখন রাত ন’টা । মেয়ের দল ইতিমধ্যে দু'দশট বড় খেয়ে চলে গিয়েচে । স্থলেখার এসব কাজ অভ্যাস নেই। ঠায় বসে থাকা রান্নাঘরের গরমে কতক্ষণ পোষায় ? এরা শুধু জানে, ভোজনের তরিবৎ করতে সকাল থেকে রাত বারোটা পৰ্য্যন্ত । মনে পড়লো, ওদের কলেজের এক অধ্যাপক বলেছিলেন, বাঙালীর ঘরে রান্নার বন্দোবস্ত যে ধরনের, তাতে খাটুনি এবং আয়োজন যত বেশি, খাদ্যবস্তুর পুষ্টিকারক গুণ তত নেই ! জিবে ভালো লাগানোর দিকে যত লক্ষ্য, খাদ্যের গুণাগুণের দিকে তত লক্ষ্য থাকলে আজ বাঙালীর স্বাস্থ্য এত খারাপ হোতে কি ? বলে-বলে শুধু নিৰ্ব্বোধের মত একরাশ তালের বড় ভাজা. ওর বড়-জ রান্নাঘরে বসে ওকে বললে—রাঙা-বোঁ, আমার ঘর থেকে গামছাখানা নিয়ে এসে না ভাই, গা ধুয়ে নিই কুয়োতলা থেকে। বড় গরম লাগচে বড ভেজে। স্বলেখা বললে—আলো আছে তোমার ঘরে ? —নেই। হারিকেনটা নিয়ে যাও ভাই । বড়-জার ঘরে ঢুকে গামছা খুজতে গিয়ে স্থলেখার চোখে পড়লে একটা জিনিস। ঘরের ছোট্ট টেবিলটার ওপর একখানা খাম পড়ে আছে, ‘অল ইণ্ডিয় রেডিও’ ছাপা আছে তার ওপরে ৷ খামটাতে নাম লেখা আছে, নীরজাম্বন্দরী মিত্র, রায়গ্রাম, বাহিরগাছি পো৯, জেল নদীয়া । তাড়াতাড়ি সে খামখানা খুলে ফেলে পড়লে—সতেরোই আগস্ট তারিখে নীরজাকুমারী মিত্রের গান আছে রেডিওতে, তারই চিঠি ও কনট্রাক্ট ফরম্। উল্টেপান্টে দেখলে স্কুলেখা, কোনো ভুল নেই কোথাও। নির্থাৎ রেডিও-কনট্রাক্টের চিঠি । কিন্তু কার নামে ? নীরজাস্বন্দরী মিজ কে ? একটা অস্পষ্ট সন্দেহ ওর মনে জাগলো। তাই যদি হয় ? তখুনি সে রান্নাঘরে ছুটে এসে চিঠিখানা দেখিয়ে বললে—এ কার চিঠি, দিদি }