পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/৩৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জনসাধারণ Wo% চাই মোটের ওপর। দেবতাকে তুষ্ট রাখতে হোলে দেবীর পূজা না দিলে হয় না। কমপিটিশনের বাজার, বুঝে কাজ করবে । ডাক এল। একগাদা চিঠি । হাতে নিয়ে তাড়াতাড়ি একবার দেখে নিতে নিতে শিবশঙ্কর ডেকে বললেন—ও রিতুয়া, নিয়ে যা—বড় বৌমার চিঠি, নিয়ে যা—স্থলেখার—ছোট বৌমার —ওপরে দিগে যা । আর শোন—বলে আয় আমি চান করবো এখুনি। খাবার ঘরে বড় পুত্রবধু নন্দ ভাত নিয়ে এলো টেবিলে । ছোট বাটিতে কাচামুগের ডাল, বে-মশলার মৌরল মাছের ঝোল আর কাগজি লেবু কাটা পৃথক ডিশে । সামান্য একটু ঘরে পাতা দই শ্বেতপাথরের বাটিতে । শিবশঙ্কর খেয়ে হজম করতে পারেন না, লিভারের রুগী । পুত্রবধু বললে –ও বেলা কখন ফিরবেন বাবা ? —তা কি বলতে পারি কথন ফিরবো ? নানা কাজ । তারপর আজ য়্যাটর্ণির সঙ্গে গুরুতর কাজ রয়েচে । কেন ? পুত্রবধু হেসে বললে—আমরা ভাবচি বেহালা যাবো পিকনিক করতে। গাড়ীখানার দরকার ছিল— —ও । তা–কটার সময় যাবে। গাড়ী না হয় শোভা সিং আপিস থেকে নিয়ে আসবে এখন। তোমাদের পৌঁছে দিয়ে চলে আসবে। আসবার সময় তোমরা ট্যাক্সিতে এসো। পৌছে গাড়ী ছেড়ে দিও–বিমান কোথায়? ওপরে আছে ? পুত্রবধু মুখ নত করে বললে—তা তো জানি নে বাবা । —তার মানে ? বেরিয়েছে ? পুত্রবধু পায়ের নখে মাটি খুঁটতে খুটতে সেদিকে চেয়ে থেকে উত্তর দিলে—উনি কাল রাত্তিরে তো বাড়ী আসেন নি । —সে কি কথা ! কালও আবার আসে নি—ই – শিবশঙ্কর ভ্র কুঞ্চিত করলেন, আর কিছু বললেন না । বেলা একটা । শিবশঙ্করের আপিস বেণ্টিঙ্ক স্ট্রীটে । বেশি বড় আপিস নয় । জন আট নয় কেরানী বিবিধ খাতা নিয়ে ব্যস্ত। একজন ছোকরা টাইপরাইটারে ঠকঠক টাইপ করচে । শিবশঙ্করকে আপিলে ঢুকতে দেখে সবাই একটু সমস্ত হয়ে উঠলো। সন্ত্রস্ত হবার কথা । দেখতে আপিল ছোট হোক, কিছু দিন আগে এই আপিলে বসেই শিবশঙ্কর সরকার চালের কারবারে কম করেও সাত লক্ষ টাকা মুনাফা পেয়েচেন । তেরশ’ পঞ্চাশ সালে দুর্ভিক্ষের বছর। ভেরে সিকে দরে ধানের মণ কিনে সাড়ে বোল টাকা মণ দরে ধান বিক্রি করেন । চালের কন?" নিয়ে এক হাজার টন চাল খরিদ করেন ত্রিপুরা জেলা থেকে । তারপর সে দেশে চালের দর উঠে গেল চল্লিশ টাকা মণ । ভালো কাজ করেন নি তা নয় । দেশের বাড়ীতে প্রায় দু হাজার লোককে ক্ষেন-ভাতের খিচুড়ি খাইমেচেন, কাপড় বিতরণ করেচেন কত লোকৰে । সম্প্রক্তি হুট মিলিটারী