পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(之 বিভূতি-রচনাবলী করা যায়, কেবল করা যায় না তার অস্তঃপ্রবিষ্ট স্বগভীর শাস্তি ও বহুগুণে বর্ধিত স্থখদুঃখের অমৃভূতির স্পন্দমান তীব্রতার। সে কি ভয়ানক জীবনছন্দ ! সেখানকার মাটিতে পা দিলেই মনের স্বথ, দুঃখ, শোক, স্নেহ, প্রেম কল্পনা সব শতগুণ বেড়ে যায় । অনুভূতির তীব্রতা যারা সহ না করতে পাতে, তারা সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে সেই মুহুর্তেই। বলহীন মন স্বৰ্গলাভ করতে F | পুপ শক্তিময়ী, পুষ্প চতুর্থ স্তরের উচ্চ থাকের আত্মা –তাকেও রীতিমত চেষ্টা করতে হোল প্রাণপণে, সংজ্ঞা বজায় রাখবার জন্তে । চারিপাশের অদৃশ্য ইথারের তরঙ্গ যেন তার দেহের কোন অজানা ইন্দ্রিয়কে স্পর্শ করে তাকে সক্রিয় করে তুলেচে। সে অজ্ঞাত ইন্দ্রিয়ের কাজ যে অনুভূতিরাজিকে মনের মুকুরে প্রতিভাত করা -পুথিবীতে, এমন কি নিম্নতর স্বর্গগুলিতেও, সে সব অনুভূতির সঙ্গে পরিচয় ঘটে না । অথচ প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই তারা থাকতে পারে এবং আছেও, কেবল আস্বাদ করবার ইন্দ্রিয় ঘুমিয়ে আছে । উচ্চ জগতের তীব্রতর স্পন্দন-তরঙ্গ তাকে জাগিয়ে তুলতে পারে - কিন্তু যেমন গঙ্গা যখন মর্তে অবতরণ করেন, তখন কেউ তার তাল সামলাতে পারেনি, ঐরাবত পর্যন্ত ভেসে গিয়েছিল--উচ্চ স্বগের দেবতা মহাদেব নেমে এসে জটাজাল বিস্তার করে ন৷ দাড়ালে কারো সাধ্য ছিল না সে বেগবত স্রোতোধারার মুখে দাডায়—ঐ সব অনুভূতির বেগ তেমনি সহ করতে পারে একমাত্র উচ্চস্তরের দেবতারাহ । চারিদিকে ফুল ফুটে আছে, সে সব ফুলের রঙ্গ বা ক চ রকম, কিন্তু আলোর মত কি একটা অজানা পদার্থে সে সব গাছ, সে সব ফুল তৈরী -এক৮া ছিড়ে নিলে তার জায়গায় তথনি আর একটা ঐরকম ফুল গজাবে। বড় বড় জলাশয় আছে, তার নীলাভ নিস্তরঙ্গ বক্ষেত্ত্ব উপর দিয়ে লোকের হেঁটে যাতায়াত করচে, যেমন মাটির ওপর দিয়ে পৃথিবীর লোক যায় । অথচ সেখানে নৌকাও আছে যাদের ইচ্ছে, নৌকা করেও বেড়াতে পারে । এক জায়গায় স্ফটিক প্রস্তরের মত স্বচ্ছ কোনো "দার্থে তৈরী একটা বাড়ীর সামনে গিয়ে ঐ রঙীন জোতিরেখা বাড়ীর মধ্যে ঢুকে গিয়েচে । পুপ সেখানে ঢুকে দেখলে প্রণয়দেব একটা বড় জানালার ধারে দাড়িয়ে কি যেন দেখচেন । পুষ্প ঘরে ঢুকতেই ওর দিকে চেয়ে বল্পেন—তোমায় ডেকেচি বড় বিপদে পড়ে। আমায় একটু সাহায্য করে । পুষ্প বল্লে -বলুল কি করতে হবে । 臀 দেবী বল্লেন—বোপো । পৃথিবীতে গিয়ে কাজ করতে পার, এমন লোকই চাইছিলাম । তুমি ভিন্ন আর কারো কথা মনে উঠল। না । যতীন কোথায়, তাকে আনলে না কেন ? পুপ সলজমুরে বল্লে—যত্বদা এখানে আসতে পারবে না। আসতে চেয়েছিল, আমি আনিনি । • দেবী প্রসন্ন সহাস্য মুখে বল্লেন--আচ্ছা, এবার থেকে আমি তাকে নিয়ে আসবো ।