পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/১৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেবযান ARoS আগে—আমি পৃথিবীতে একটি মেয়েকে কত ভালবাসতাম, আমাদের গ্রামের সদানন্দী মঠের ফুলবাগানে কত বেড়াতাম দুজনে এমনি জ্যোৎস্নারাত্রে-লুকিয়ে লুকিয়ে, —এখন সে কোথায় ? অনেকটা অন্যমনস্ক ভাবেই কবি মাথা দুলিয়ে দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে বরেন—সত্যি তাই ভাৰি, কোথায় সে ? পুষ্প অবাক হয়ে বল্পে-কেন, আপনি তার দেখা পাননি আর ? —না। এ বিশ্বের ভিড়ে কোথায় হারিয়ে গেল। দ্যাথো, আমরা কবি, জগতে রূপরসের উপাসক। একেই বড় করেচি জীবনে । যারা বলেন সব মায়া, তাদের কথা বুঝি না । মায় লয় হোলে এই রূপরসের জগৎটাও লয় হয়। তা আমরা চাইনে—তাই দুঃখ পাই, কিন্তু দুঃখের মধ্যেও জানি ভগবানই স্থষ্টি করেচেন এই জগৎ । সবই তিনি। কষ্ট পেলেও জানি তার হাতে কষ্ট পাচ্ছি। প্রেমময়ের তাড়নায় কষ্ট কি ? সব মুখ বুজে সহ করি । এটাও মানি, এই রূপরসের সাধনার মধ্যেই আমাদের সিদ্ধি। এ পথেও তাকে পাওয়া যায়। চলো, নরকে আমি নিজে যাবো, খুজে বার করি তোমাদের সেই মেয়েটিকে । তার দুঃখ আমি কবি আমি বুঝি— যতীন বল্লে-প্রভু, আমার পুনর্জন্ম ঠিক হয়ে গিয়েচে সেই মেয়েটিকে নিয়ে। করুণাজেৰী জানিয়েচেন— ক্ষেমদাস বল্লেন—তিনি যা করেচেন, তোমাদের মঙ্গলের জন্যেই । তিনি পৃথিবীয় অধিষ্ঠাত্রী মহাদেবী—তাকে তোমরা করুণাদেবী বল, সীতা বল, দুর্গ বল, লক্ষ্মী বল, সরস্বতী ৰল—সবই এক । তবে এখন মেয়েটির কাছে যাবার কোনো প্রয়োজন নেই। উপায় হয়ে গিয়েচে । যতীন আশ্চর্য হয়ে গেল শুনে। অত বড় বড় পৌরাণিক দেবীর সঙ্গে সে করুণাদেবীকে এক আসনে বসায়নি। উনি যদি দুর্গ হন, কালী হন, সীতা হন, লক্ষ্মী হন—তবে তার আর জন্মমরণের ভয় কিসের ? অাশারই বা ভয় কিসের ? হালিমুখে সে মহাগৌরবে নরকে যেতেও প্রস্তুত । ক্ষেমাস ওর মনের ভাব বুঝে বনে—জন্ম নিতে দুখ কিসের । পৃথিবীর রূপরস আবার আস্বাদ করে এসো। সেই জ্যোৎস্না, সেই বনবিতান, কোকিলের কুস্থতান, সেই মায়ের কোলে ঘাপিত একান্তনির্ভরতার শৈশব, প্রথম যৌবনে প্রিয়ার প্রথম দৰ্শন-ৰাও যাও, ওরই মধ্যে ভগবানে মন রেখো–কর্ম যতদিন না কাটে । কিয়ে মানুষ জনমিয়ে পশুপাখী অথবা কীটপতঙ্গে করমবিপাকে গতাগতি পুনপুন মতি রহ তুম্বা পরসঙ্গে । মেয়েটির কাছে যাবার কোনো দরকাব নেই। দেবী যখন তার ব্যবস্থা করেচেন, তখন আমাদের সেখানে যাওয়া ধৃষ্টতা হবে । দেবী সর্বমঙ্গলা তাকে শ্রেয়ের পথে চালিত করবেন। ঠিক সেই সময় একজন জ্যোতির্ময় মহাপুরুষের আবির্ভাব হোল বৃক্ষতলে। ৰজন উরি দিকে চেয়েই চমকে উঠলো, ইনি সেই সন্ন্যাসী, যিনি একদিন স্পর্শদ্বারা তার মধ্যে পৰিকল্প সমাধির অভিজ্ঞতা সঞ্চার করেছিলেন ! সেই যোগী পুরুবই—নীল বিছাতের মত জাত বেকচ্চে, সারাদেহ থেকে ওঁর । , - f 河。bー>>