পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/২৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উপলখও eq না—আমার স্ত্রীর মরবার সময়কার কথা, তাই । সে আমায় বলে গিয়েছে যার টাকা ভাঁকে ফিরিয়ে দিতে । 聯 কন্যাপক্ষ এই সব শুনিয়াই বিবাহের জন্য কোন আগ্রহ দেখাইল না । ওই টাকা বাদ দিলে কালী চৌধুরী নিঃস্ব লোক। একে দোজবরে পাত্র, তাহাতে গরীব লোক ; এমন পাত্রে মেয়ে দিবার আগ্রহ যদি তাদের না থাকে, নিতান্ত দোষ দেওয়া চলে না । একদিন পিসিমা বলিলেন-হ্যারে কালী, এসব কি কথা শুনছি ? তুই নাকি অনেক টাকা পেয়েছিল ? . কালী বলিল—কে বললে ? —সকলেই বলছে । বলছে অত টাকা হাতে থাকতে ছেলেট বউটাকে মেরে ফেললে । হ্যারে, কথাটা সত্যি ? —হঁ্যা পিসিমা । বলিয়া কুড়ানো টীকার কথা সে সব ব্যক্ত করিল। পিসিমাও শুনিয়া বলিলেন, বউ যখন বারণ করেছে তখন আর ওতে হাত দিতে হবে না এখন । এদিকে বছর ঘুরিয়া গেল, কিন্তু টাকা চাহিতে কোন লোক আসিল না বা থানা-পুলিশের হাঙ্গমাও হইল না। ছ একজন গায়ে পড়িয়া জিজ্ঞাসা করিতে আসিল, টাকাটা কোথায় আছে। কালী চৌধুরী বলিল—টাকা কি ঘরে রাখি ? গিরীন ঘোষের আড়তে জমা আছে। একবার তার বাড়ী সিদ হইয়া গেল । আরও এক বছর ঘুরিয়া গেল। এই বছরে কালী চৌধুরীকে বিবাহ করিতে হইল পুনরায় । গরীবের ঘরের মেয়ে। কন্যাপক্ষ কালীকে দূরিত্র জানিয়াই বিবাহ দিল, ও পাচ হাজার টাকার কোন কথাই উঠিল না। টাকার বাণ্ডিল সেই ভাঙা হাতবাক্সের মধ্যেই রহিল, নববধু ক্রমশ দুইটি ছেলেমেয়ের মা হইল, সেও জানিতে পারিল না টাকার কথা । বৃদ্ধ পিসিমাও ইতিমধ্যে স্বর্গে চলিয়া গেলেন। * স্বখে-দুঃখে এগারটি বছর কাটিয়া গিয়াছে। কালী চৌধুরীর মাথার চুলে পাক ধরিয়াছে। তাহার প্রথম পক্ষের ছেলে দুটি রেলের চাকরিতে ঢুকিয়া দু-পয়সা আনিতেছে। একদিন দুপুরবেলা কালী চৌধুরী স্ত্রীকে ডাকিয়া বলিল-শোন একটা কথা— স্ত্রী বড়ি শুকাইতে দিয়া, কাক তাড়াইতেছিল বাহিরের রোয়াকে । কাছে আসিয়া বলিল--কি ? —ওই হাতবাক্সটা নিয়ে এস তো । তারপর পুরানো কাগজপত্রের ভিতর হইতে নোটের বাণ্ডিলটা-বাহির করিয়া বলিল— এদিকে এল । গোন । 廳 願 স্ত্রী অবাক হইয়া নোট গুনিতে গুনিতে চুপি চুপি বলিল-ধ্যাগ, এত টাকা কোথায় পেলে ?