পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/৪৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ছায়াছৰি 89 নির্মল বোধ হয় আমার আনাড়ি ও আড়ষ্ট ভাব দেখে হাসতে যাচ্ছিল, হাসির রেখা ওয় মুখে ফুটে উঠে মিলিয়ে গেল। বললে—আপনাকেই ডাকচি– —ও, বলুন— —আপনি প্রফেসর গুপ্তের নোট টুকেচেন ? —হ্যা, টুকেচি ৷ —খতাখানা কাইগুলি দেবেন একদিনের জন্যে ? কালই বেত দেবো । —নিশ্চয়ই, নিশ্চয়ই! এই নিন। আপনি যে ক-দিন ইচ্ছে রাখতে পাবেন । —ন, আমি কালই ফেরত দেবো। থ্যাঙ্কস্ । আমি যে সময় ওর হাতে খাতা দিচ্ছি, ঠিক সেই সময় আমাদের ক্লাসের বিশ্ব বখাটে ছোকরা সোমেশ্বর গুহঠাকুরতা অদূরে আভিভূত হোল, কোথা থেকে কি জানি । পায়ের শব্দে নির্মলা খাতা নিতে নিতে যেন চমকে উঠে পেছন ফিরে তীকালো । পরক্ষণেই থাত নিয়ে আর কোনো কথা না বলে হন হন করে চলে গেল । সোমেশ্বর আমার কাছে এসে দাত বের করে হেসে বললে—কি বাবা ভাল ছেলে, ডুবে ডুবে জল খাওয়া ? 鬱 আমার রাগ হোল, লজ্জাও হোল । সোমেশ্বরের সঙ্গে আমার এমন কিছু ঘনিষ্ঠত নেই । অত ঘন-ঘন সিগারেট খাওয়া দেখে আমি ওর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে আলাপ করতে ঘৃণা করতাম । ওরাও ভালো ছেলে বলে আমায় ঘৃণা করতে । সব কলেজেই বখাটে ছেলেরা ভালো ছেলেদের ঘৃণা করে থাকে । আমি বললাম—কি ? —মানে, ধরে ফেলেচি। নির্মলা সরকারের সঙ্গে জমালে কবে থেকে তলায়-তলায় ? — ই ই বাবা-হাতে-হাতে ধরে ফেলেচি আজ-- —কি বলচেন বাজে কথা ? উনি আমার কাছে আজই কেমিষ্ট্রির নোট চেয়ে নিলেন । —আজই ? • মানে আজই ? সোমেশ্বর শর্ম যেদিন দেখে ফেলেচে সেই দিনই ? —সত্যি বলচি । & —বেশ বাবা বেশ। তবে বলে দিচ্চি, বেশি ওদিকে নজর দিও না । হরিপ্রসাদকে চেলো তো? হরিপ্রসাদ ডুয়েল লড়বে তোমার সঙ্গে। সে বড়লোকের ছেলে, নির্মলুর জন্তে সে নিজের জমিদারী বিলিয়ে দেবে বলেচে । পয়সা খরচ করতে সে হটবে না । —বাপের জমিদারী আমারও আছে জেনে রাখবেন । কথা শেষ করে আমি রেস্ট রেন্টের দিকে চলে গেলাম। ওদের মত ছেলের সঙ্গে দাড়িয়ে কথা-কাটাকাটি করতে আমি ঘৃণা বোধ করি । কলেজ থেকে বের হয়ে একটা নির্জন স্থান খুজতে খুঁজতে চলে গেলুম গড়ের মাঠে ! চিনেবাদাম চিবুতে চিবুতে কতক্ষণ ভাবলাম আজকার কথাটা। নির্মলা সরকার কি ধরনের মেয়ে আমি জানি। সে দেবী,