পাতা:সংবাদপত্রে সেকালের কথা প্রথম খণ্ড.djvu/৩১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৭২ সংবাদ পত্রে মেকালেৰ কথা তবে গোপনে আমার মাসীর বাটতে অন্ত রাত্রিতেই তোমার সহিত আমার বিবাহ হইতে পারে অতএব তুমি কোন ছল করিয়া উপবাসী থাক আমিও আপন মাসীর বাটীতে গিয়া বিবাহের উদ্যোগ করি। ইহা কহিয়া কন্যা সেখানে গেলে বর স্বান করিয়া আসিয়া ঘটককে কহিলেন তুমি শীঘ্র আমার বাটহইতে ৫০ পঞ্চাশ টাকা আনিয়া দেহ অদ্যই আমার বিবাহ হইতে পারে। ঘটক টাকা আনিয়া দিয়া প্রস্থান করিল। এখানে বর পীড়া ছল করিয়া বাহিরের ঘরে অভুক্ত শয়ন করিয়া থাকিলেন । কিঞ্চিংকাল পরে কন্যার নিকটহইতে এক স্ত্রী লোক আসিয়া বরের নিকটহইতে পচিশ টাকা লইয়া গেল। ঐ টাকা পাইয়া কন্যা আপন মাসীকে কহিল যে আমি এইরূপে বিবাহ করিতে বাসনা করিয়াছি ইহাতে তোমার পরামর্শ কি। তাহাতে তাহার মাসী মহাআনন্দিত হইল যেহেতুক কন্যার পিতার এই দুষ্কৰ্ম্ম হেতুক সকল লোকই তাহার বিপক্ষ ছিল। পরে কন্যা পুরোহিত ও নাপিত ও চৌকিদার প্রভৃতিকে ডাকাইয়া যাহার যে পাওনা তাহাকে তাহার দ্বিগুণ২ দিয়া সকলকে বশ করিল। পরে শংখ বস্ত্র ও বৃদ্ধির সামগ্রী প্রভৃতি তাবৎ গুপ্তরূপে আয়োজন করিয়া ঐ রাত্রেই শুভ বিবাহ হইল । পরদিন প্রাতঃকালে কন্যা আপন স্বামীকে কহিল ষে আমারদের বাটীতে গিয়া আমার পিতাকে প্রণাম কর যখন তিনি তোমার উপর ক্রোধ করিবেন তখন তাহার উত্তর আমি করিব তুমি কিছু কহিও না।. প্রাতঃকালে কন্যাকৰ্ত্ত উঠিয়া তামাকু খাইতেছেন এমন সময়ে ঐ ব্রাহ্মণ নূতন বস্ত্র পরিধান ও হাতে স্থতা বান্ধা ও দর্পণ শুদ্ধা গিয়া তাহাকে প্রণাম করিল। তাহাকে দেখিয়া কন্যাকৰ্ত্ত কহিলেন তুমি কে । সে কহিল আমি মহাশয়ের জামাতা গত রাত্রিতে তোমার কন্যার সহিত আমার বিবাহ হইয়াছে ইহা শুনিয়া ব্রাহ্মণ জলিয়া উঠিয়া কহিল ওরে বেটা চোর তুই কাহার কন্যা কাহার হুকুমে বিবাহ করিলি কেহ এখানে আছ হে এই জুয়াচোর বেটাকে বান্ধ এখনি ইহাকে থানায় দিতে হইবেক এবেট হারামজাদ লোকের জাতি মজাইতে আসিয়াছে এইরূপ কটু কহিতেছে এমত সময়ে ঐ কন্য আসিয়া কহিল যে শুন পিতা আমি বিবাহ করিয়াছি উহাকে অসুযোগ করা অকুচিত । কন্যার এই কথা শুনিয়া তাহাকেও যথেষ্ট কটু কহিতে লাগিল । তাহাতে কঙ্কা কহিল যে শুন যদি আমি অকুলে কিম্বা অজাতিতে বিবাহ করিতাম তবে তুমি অঙ্গুযোগ করিতে পারিতা কিন্তু দিবসে তুমি এই পাত্রের সহিত পণাপণ ও জাতিকুল সকল স্থির করিয়াছিল। কেবল টাকা লইতে বাকী ইহাতে আমি বিবাহ করিয়াছি মহাশয় আর ক্রোধ করিবেন না ক্ষাস্ত হউন প্রজাপতির নিৰ্ব্বন্ধ যাহা হবার তাহা হইয়াছে এখন আর অহযোগ করিলে কি হইবে। তাহাতে ব্রাহ্মণ ক্ষান্ত না হইয়া গ্রামের খানাতে নালিশ করিলে থানাদার কতক বৃত্তাস্ত পূৰ্ব্ব জ্ঞাত হইয়াছিল তথাচ তাহার অনুরোধে এক জন পেয়াদী দিল । পেয়াদা বাটতে আইলে কন্যা কহিল শুন পেয়াদী পিতা জাতিকুল স্থির করিয়া সম্বন্ধ করিয়াছেন আমি বিবাহ করিয়াছি ইহাতে দারোগার কোনো এলেকা নাই তবে তুমি পেয়াদা আসিয়াছ এক টাকা রোজ লইয়া গিয়া দারোগাকে এই সকল বৃত্তাস্ত কহ।