পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

వe বিভূতি-রচনাবলী মুখুয্যে জ্যাঠামশায়ের বড় ছেলে হারাধন হস্তদন্ত হয়ে হাজির। ওদের চেহার দেখে আমি বুঝলাম, একটা কিছু ঘটেছে ! আমি কিছু বলবার পূর্বেই সনাতনদা বললে—এদিকে শুনেছ কাও ? - —কি ব্যাপার ? —শাস্তি আর রামপ্রসাদ দুজনে কাল ভেগেছে । —কে বললে ? কোথায় ভাগলো ? —নাক-ছেদী গিন্নি ভোরবেলায় পূজোর ফুল তুলতে গিয়েছিলেন বড় মুখুয্যে মশায়ের বাড়ী। তিনি শুনলেন শাস্তির মা ঘরের মধ্যে র্কাদছে ! শাস্তি নেই, তার বাক্সের মধ্যে কাপড় ও দু-একখানা যা সোনার গহনা ছিল, তাও নেই। ওদিকে দেখা গেল রামপ্রসাদও নেই। —আমি অবাক হয়ে বললাম—বল কি ? সনাতনদা বললে,—তোমার কাছে গ স্বদ্ধ সবাই আসছে শান্তির মাকে নিয়ে। এর কি করবে করে । আমি বললাম—এর কিছু উপায় নেই সনাতনদা। শান্তি নিজের পথ নিজে করেছে। আপদ গেছে গায়ের । এ নিয়ে কোনো গোলমাল হয় এ আমার ইছে নয়। স্বরবালা বললে—মেয়েমানুষকে চিনতে এখনও তোমার অনেক দেরি । শান্তি ঠাকুরঝিকে বডড ভাল মানুষ ভেবেছিলে, না ? বর্ষা নেমেছে খুব । দুজায়গায় ডাক্তারখানায় যাতায়াত, জলকাদায় সাইকেল চলে না— গরুর গাড়ী যেখানে চলে সেখানে গরুর গাড়ী, নয়তো নেীকো যেখানে চলে নৌকো। ছইয়ের বাইরে বসে দেখি বাকে বীকে পাড়-ভাঙা ডুমুর গাছ কিংবা বঁাশ ঝাড়ের নিচে বড় বড় শোলমাছ ঘোলা জলে মুখ উচু করে খাবি খাওয়ার মত ভাসছে, কোথাও ভুল করে ডুব দিলে মস্ত বড় কচ্ছপট । মঙ্গলগঞ্জের কুঠীঘাটে নৌকো বাধা হয়। নেমে যেতে হয় সিকি মাইল দূরে মঙ্গলগঞ্জের বাজারে—এখানেই আমার একটা শাখা ডাক্তারখানা আজ দুমাস হোল খুলেছি। সপ্তাহের মধ্যে বুধবার আর শনিবার আলি। সনাতনদী কোনো কোনো দিন আসে আমার সঙ্গে, কোনো দিন একাই আসি । ডাক্তারখানা মঙ্গলগঞ্জের ক্ষুত্র বাজারটির ঠিক মাঝখানে। আমাদের গ্রাম থেকে প্রায় সাত মাইল দূরে। এখানকার লোকের পীড়াপীড়িতেই এখানে ক্লিনিক খুলেছি, নয়তে রোগীর ভিড় কোনদিনই কম পড়েনি আমার গ্রামে। এখানেও লেখা আছে সমাগত দরিত্র রোগীগণকে বিনাদর্শনীতে চিকিৎসা করা হয় । ডাক্তারখানায় পৌছবার আগেই সমবেত রোগীদের কলরব আমার কানে গেল। কম্পাউণ্ডার রামলাল ঘোষ দূর থেকে আমার আসতে দেখে প্রফুল্লমুখে আবার ডিসপেন