পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Egbr বিভূতি-রচনাৰলী তো এই মাসীর মুখেই শুনবি—বেচাল দেখলে রাশ কে আর টানতে যাবে, কার দায় পড়েচে ? বুড়ী গঞ্জ, গজ করতে করতে উঠে চলে গেল । আমি পান্নাকে অনেকক্ষণ দেখি নি। অঙ্গুযোগের সুরে বললাম—আমি বাড়ি চলে যাব আজ, ঠিক বলচি— & —কেন ? কেন ? ওই বুড়ীর কথায় ! তুমি— —সে জন্যে না । তুমি এতক্ষণ কোথায় ছিলে ? -७हे ! পান্ন মুখে কাপড় দিয়ে খিলখিল করে হেসে উঠলো। আমি রাগের সঙ্গে বললাম—হাসচে যে বড় ? ও বললে—তোমার কথা শুনলে না হেসে থাকা যায় না। তুমি ঠিক ছেলেমানুষের মত । আমি এমন মানুষ যদি কখনো দেখেচি ! বলেই হাত দুটো অসহায় হাস্তের ভঙ্গিতে ওপরের দিকে ছুড়ে ফেলবার মত তুলে আবার হাসতে লাগলো। ওর সেই অপূর্ব ভঙ্গি হাত ছোড়ার, সারা দেহের ঝলমলে লাবণ্য, মুখের হাসি আমাকে সব ভুলিয়ে দিলে। ও আমার কাছে এসে আমার হাত ধরে বললে—তুমি চলে গেলেই হল ! মাইরি। পায়ে মাথা কুটবো না ? আমাকে ও চা দিয়ে গেল। বললে—খাবে কিছু ? স্বরবালার কথা মনে পড়লে । স্বরবালা এমন বলতো না, খাবার নিয়ে এসে রাখতে সামনে। আমি জানি এদের সঙ্গে স্বরবালাদের তফাৎ কত । না জেনে বোকার মত আসি নি। স্বরবালা স্বরবালা, পান্না পাল্লা—এ নিয়ে ইনিয়ে বিনিয়ে বাক্যবিদ্যাস করে কোন লাভ নেই। পান্না খাবার নিয়ে এল। চারখানা তেলেভাজা নিমকি, এক মুঠে ঘুৰনি দান, দুখান পাপড় ভাজ। এই প্রথম ওর হাতের জিনিস আমাকে খেতে হবে। মন প্রথমটা বিদ্রোহ করে উঠেছিল—কিন্তু তার পরেই শাস্ত হয়ে এল। কেন খাবে না ওর হাতে ? g একটা কথা আমার মনে খচখচ করে বাজছিল। পান্নার ঘরে লোক আসে রাত্রে, বুড়ী বলছিল। যতবার এই কথাটা মনে ভাবি, ততবার যেন আমার মনে কি কাটার মত বাজে । বললাম কথাটা পান্নাকে । পান্না বললে—কি করতে বলে আমায় ? —এ সব ছেড়ে দাও । হয় পায় খুব চালাক মেয়ে, নয় আমার অদৃষ্ট্রলিপি—আবার পান্না বললে—যা তুমি বলবে