পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/১২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3 & 3) —তোমায় দেব না কিন্তু—হ হ – ছেলেমানুষের ভঙ্গিতে হাসিমুখে ঘাড় দুলিয়ে বলে। আমিও হেসে বলি—দেখাও না, কেড়ে কি নিচ্চি ? —বিশ্বাস কি ? পান্না একটা রঙীন রুমালের খুঁট খুলে দেখালে একখানা দশটাকার নোট আর খুচরে। রূপোর টাকা গোটা বারো, একে একে গুণলে । আমি বললাম—নীলির ভাগ আছে তো এতে ? —ওর ভাগ ওকে দিয়েচি। এ তো প্যালার টাকা । নীলিকে কেউ প্যাল দ্যায় দি তো । --দায় নি —আহা, কবে দায় ? —তার মানে তুমি রূপসী বালিকা, তোমার দিকে সকলের চোখ ? -शांe ! —সত্যি। জানো না কি হয়েছিল কাল ? নীলি বলে নি তোমায় ? —ম । কি হয়েছিল গো ? —নায়েবের চোখ পড়েছিল তোমার দিকে । —লে কি রকম ? ওকে সব খুলে বললাম। ও শুনে বললে—ক’ত জায়গায় এ রকম বিপদে পড়তে হয়েচে । ভবে তোমাকে নিয়ে এসেছিলুম কেন ? সঙ্গে পুরুষ না থাকলে কি আমাদের বেরুনো চলে ? হেসে বললাম–টং কোরো না পাল্লা ।” —সে কি ? —সব জায়গায় সতী ছিলে তুমিও ? বিশ্বাস তো হয় না। পান্না গম্ভীর মুখে বললে—না । তোমার কাছে মিথ্যে কথা বলবো না। ভাবনহাটি তালকোলার জমিদার-বাড়ীতে কি একটা বিয়ে উপলক্ষে আমরা গেলুম মুজরোতে। জমিদারের ভাইপোর বিয়ে। সেই বিয়ের নতুন বর ভাইপে ক্ষেপে উঠলো আমায় দেখে সেই রাত্তিরে। আমায় নৌকোতে করে সারা রাত নিয়ে বেড়ালে । –বলো কি ? —তারপর শোনো। সেই লোক বলে—আমরা চলে যাই কলকাতায় পালিয়ে, নতুন বেীকে ফেলে। বিয়ে হয়েচে, তখনও বুঝি ফুলশধ্যে হয় নি। বলে কত টাকা চাও, বলে। কত্ত টাকা চাও,—আমাকে হাতে ধরে পীড়াপীড়ি। কত বোঝাই—শেষে না পেরে বলি হাজার টাকা মাসে নেৰে । তখন কঁদিতে লাগলো । পুরুষ মানুষের কান্না দেখে আমার আরও বেয়া হয়ে গেল। বলচে, আমার তো নিজের জমিদারি নয়, বাবা কাকা বেঁচে ।