পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/১২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

368 বিভূতি-রচনাবলী -श्-िश्-िश्–ि —অত হাসি কিসের ? —জব্দ গো জব্দ । বডড জবা হয়েচ এবার | —কিসের জন্ধ ? —পয়সা ফুরিয়েচে তো হাতে ? এবার নীলিকে খবর দাও। দু’জনে মুঞ্জরো করে আনি । না হোলে খাবে কি লবডংক' ? পান্না দুই হাতের বুড়ে আঙ্গুল তুলে নাচিয়ে অপূর্ব ভঙ্গিতে হেসে আবার গড়িয়ে পড়লো । আমার কি যেন একটা হয়েচে, পান্না যা করে আমার বেশ ভালো লাগে, যে কথাই বলুক বা যে ভঙ্গিই করুক। আমি মুগ্ধ হয়ে ওর হেসে-লুটিয়ে-পড়া তমুলতার দিকে চেয়ে রইলাম । অপূৰ্ব্ব স্বত্র মেয়ে পান্না। আর একটা কথা ভেবে দেখলাম বিকেলে একটা পার্কে নিরিবিলি বসে। আমার হাতে আর অর্থ নেই বা নিঃস্ব হয়ে গিয়েছি এ জিনিসটা পান্নার পক্ষে আদৌ প্রতিপ্রদ নয়। কিন্তু এটাকে ও অতি সহজভাবেই মেনে নিয়ে তার প্রতিকার ও করতে চাইলে । ও নিজে উপার্জন করে এনে খাওয়াবে আমাকে ভেবেচে নাকি ? ও অতি সরল। কিন্তু এই সরলতা আমার পক্ষে সম্পূর্ণ অভিনব। আমি এর আস্বাদ পেয়ে ধন্য হোলাম । পান্নাকে আমি মনে মনে শ্রদ্ধা না করে পারলাম না। কেমন সহজ ভাবে ও আমার নিঃস্বতার বাৰ্ত্তাকে গ্রহণ করলো ? কত সম্বাস্ত ঘরের বিবাহিত স্ত্রীরা এত সোজাভাবে স্বামীর ব্যাঙ্ক ফেল মারার বাৰ্ত্তাকে পরিপাক করতে পারতো না। পান্নার শালীনতা অন্য রকমের, ও বেশি কখনো পায়নি বলেই বেশি চায় না—তাই কি ? এই অবস্থাটাই বোধ হয় ওর কাছে সহজ | 鷲 পান্না আমাকে ভালোবাসে নিশ্চয়ই। ভাল না বাসলে ও এমন কথা বলতে পারতে না । আমার বয়েস হয়েচে, একটি যোড়শী স্বন্দরী কিশোরী আমাকে অমন ভালোবাসবে, এ আমার পক্ষে বিশ্বাস করা শক্ত। সত্যি কি পান্না আমাকে ভালোবেসে ফেলেচে ? না, বিশ্বাস করা শক্ত ৷ একবার বিশ্বাস হয়, একবার হয় না । পার্কের বেঞ্চিটার ও-কোণে একটা চানাচুর-ভাঙ্গাওয়াল এসে বললে। আমায় বললে— বাৰু, দেশলাই আছে ? আমি তাকে দেশলাই দিলাম। চলে যা না কেন বাপু, তা নয়, সে আবার আমার সঙ্গে খোসগল্পে প্রবৃত্ত হয়, এমন ভাব করে তুললে। আমার কি এখন ওই সব বাজে কথা ভাল লাগচে ? আবার মির্জন হোল পার্কের কোণ। আবার আমি বসে ভাবি ৷ পান্না আমাকে ভালোবাসে, ভালোবালে, ভালোবাসে ।••• কি এক অদ্ভুত শিহরণ ও উত্তেজনা আমার সর্বদেহে। চুপ করে বসে শুধু ওই কথাটাই ভাবি। শুধু ভেবেই আনন্দ। এত আনন্দ যে আছে চিন্তার মধ্যে, এত পুলক, এত শিহরণ,