পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/১২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

छे६ छत्र $ éé এত নেশ, এ কথাই কি আগে জানতাম ? যেন ভাঙ খাওয়ার নেশার মত রঙীন নেশাতে মশগুল হয়ে বসে আছি। জীবনে এরকম নেশা আসে চিন্তা থেকে তাই বা কি আগে জানতাম ? স্বরবালার সঙ্গে এতদিনের ঘরকন্না আমার ব্যর্থ হয়ে গিয়েচে । ভালোবাসা কি জিনিস, ও আমাকে শেখায় নি। যদি কখনো না জানতাম এ জিনিস, জীবনের কটা মস্ত বড় রসের আস্বাদ থেকে বঞ্চিত থাকতাম | স্বরবালার চিস্তা আমাকে কখনও নেশা লাগায় নি। কিন্তু কেন ? স্বরবালা স্বন্দরা ছিল না, তা নয়। আমাদের গ্রামের বেীদের মধ্যে এখনো স্থণারী বলে সে গণ্য। এখন তার বয়েস পান্নার ডবল হতে পারে, কিন্তু একসময়ে সেও ষোড়শী কিশোরী ছিল। কিন্নরকষ্ঠ না হোলেও স্বরবালার গলার স্বর মিষ্টি। এখনো মিষ্টি। ষোড়শী স্বরবালাকে আমি বিবাহ করেছিলাম। কিন্তু কিসের অভাব ছিল তার মধ্যে ? অভাব কিসের ছিল তখন তা বুঝি নি। এখন বুঝতে পারি, পান্নার ভালোবাসা পেয়ে আমার এই যে নেশার মত আনন্দ, এই আনন্দ সে দিতে পারে নি। নেশা ছিল না ওর প্রেমে। ওর ছিল কি না জানি নে, আমার ছিল না। এত যে নেশা হয় তাই জানতাম না, যদি পান্নার সঙ্গে পরিচয় না হোত। এর অস্তিত্বই আমার অজ্ঞাত ছিল। রাস্ত দিয়ে মেলা লোক যাচ্চে | পার্কে মেলা লোক বেড়াচে । এদের মধ্যে ক’জন লোক এমন ভালোবাসার আনন্দ আস্বাদ করেছে জীবনে ? ওই যে লোকটা ছাতি বগলে যাচ্চে, ও বোধ হয় একজন স্কুল-মাস্টার। ও জানে ভালোবাসার আস্বাদ ? ওর পাশের বাড়ীর কোনো দুরধিগম্য স্বন্দরী তরুণীর সঙ্গে হয়তো ছাদে ছাদে দেখা হয়—না কি ? হয়তো সেই জন্যে ও ছুটে ছুটে যাচ্চে বাসায় ? . যদি না জানে ওর আস্বাদ, তবে ওরা বডড দুর্ভাগ। অমৃতের আস্বাদ পায়নি জীবনে । ভালোবেসে আনন্দ নয়, ভালোবাসা পেয়ে আনন্দ। এ কোনো আইডিয়ালিষ্টিক ব্যাপার নয়, নিছক স্বার্থপর ব্যাপার। একটু আস্বাদ করে আরও আস্বাদ করতে প্রাণ ব্যগ্র হয়ে পড়ে। 鬱 বেলা পড়লে উঠে বাসায় ফিরলুম। পান্না কি সত্যিই আছে ? ও স্বপ্ন না তো ? না, পান্না বসে চুল বাধচে। ওর সেই তোরঙ্গট থেকে আয়ন বের করেচে, দাত দিয়ে চুলের দড়ির প্রাস্ত টেমে ধরেচে, বেশ ভঙ্গিটি করে । চমকে উঠে বঙ্গলে—কে ? পেছন ফিরে চাইতে গেল তাড়াতাড়ি। আমি বললাম—দোর খুলে রেখেট কেন ? একলা ঘরে থাকে, যদি চোর ঢোকে ? বন্ধ করে রেখে । ও অপ্রতিভ হয়ে বললে—আচ্ছা । —চুল বাধচো ?