পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/১৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

क्लिडि-ब्रध्नांदगौ 8ט3 পাগড়ী পর, হাতে বই—সে-ধরণের সাধুর মূৰ্ত্তির সঙ্গে পরিচয় সকলেরই আছে আমাদের। ইহারা সাধারণতঃ রামেশ্বর তীর্থে যাইবার জন্য পাথেয় সংগ্ৰহ করিতে, সাত সমূদ্র তেরো নদী পার হইয়া বাংলাদেশে আসিয়া গৃহস্থের ঘরে ঘরে হাত দেখিয় বেড়ায় ও প্রবাল, পাক-হরিতকী, দুর্লভ ধরণের শালগ্রাম ইত্যাদি প্রত্যেক ভক্তকে বিনামূল্যে বিতরণ করিয়া, পাথেয় ও খোরাকী বাবদ পাচ টাকার কম লয় না । গদাধর বলিলেন—কি বাবাজী ? কাহাসে আস্ত হয় ? সাধু হাসিয়া বলিল—কলকত্তা–কালিমায়ীকি থান সে । হাত দেখলাও । --বোসো বাবাজি । গদাধর হাত প্রসারিত করিয়া দিলেন—সাধু বলিল—অঙ্গুঠি উতার লেও— মুহুরী বলিলেন—আংটি খুলে নিতে বলছে হাত থেকে। গদাধর তখুনি সোনার আংটিটি খুলিয়া হাতের আঙুল প্রসারিত করিয়া সাধুর দিকে হাত বাড়াইয়া দিলেন । সাধু বলিল—চাদি ইয়ানে সোনা হাত মে রাখসে ? হাত মে চাদি রাকৃখো! নেই তো হাত কেইসে দেখেগা ? এ-কথা শুনিয়া বাক্স হইতে একটি টাকা বাহির করিয়া হাতে রাখিয়া গদাধর সাধুর মুখের দিকে চাহিয়া রহিলেন। সাধু হাতখানা ভালো করিয়া উন্টাইয়া-পাণ্টাইয়া দেখিয়া গম্ভীর হইয়া বলিল—তের বহুৎ বুরা দিন আতা-ইনসাল ইয়ানে দুসর সাল-সে বহুৎ কুছ গড়বড় হে যায়গা । - গদাধর ভালো হিন্দী না বুঝিলেও মোটামুটি জিনিসটা বুঝিলেন। কিন্তু তিনি আবার একটু নাস্তিক-ধরণের লোক ছিলেন, কৃত্রিম দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া বলিলেন - দেখা যাক। সাধু বলিল—কেয় ? —কিছু না বলত হায়, বেশ । সাধু বলিল—কুছ যাগ করনে হোগা। পরমাত্মাক কৃপা-সে আচ্ছা হো যায়গা— করোগে ? —ওসব এখন হোগাটোগা নেই বাবাজি, আবি যাওঁ। —তেরা খুশি ! বলিয়া খপ করিয়া হাতের টাকাটি তুলিয়া লইয়া বেমালুম ঝুলির মধ্যে পুরিয়া সাধু বলিল-আচ্ছ, রাম-রাম বাৰু। গদাধর একটু অবাক হইয়া বলিলেন—টাকাটা নিলে যে ? —দচ্ছিন তো চাহিয়ে বেটা। নেহি দচ্ছিনা দেনে-সে কোই কাম আচ্ছা নেহি বনতা ! * সাধু আর ক্ষণমাত্রও বিলম্ব না করিয়া ঘর হইতে বাহির হইয়া গেল। গদাধর বেকুবের মত বসিয়া রছিলেন।