পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/১৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পতি ملابد ভড় মহাশয় বলিলেন–টাকাটা দিব্যি কেমন নিয়ে গেল ! / r গদাধর রাগত স্বরে বলিলেন—সব জোচ্চোর! সাধু না হাতী ! একটা টাকার দ্বাড়ে জল দিয়ে গেল বিকেলবেলা ! আরও বলে কি না, তোমার খারাপ হবে। দু-একজন বলিল—তাই বললে নাকি বাৰু? —শুনলে না, কি বললে ? তাই তো বললে ! তারপর ও-প্রসঙ্গ ঝাড়িয়া ফেলিয়া দিবার চেষ্টায় গদাধর মুহুরীর দিকে চাহিয়া জোরখলায় বলিলেন—তারপর ভড়মশায়, বেলেঘাটার গদিতে একখানা চিঠি মুসোবিদে ক’রে ফেলুন 5प्ले क'tद्र ! —কি লিখবো ? —ওই আড়তদারির কথাটা নিয়ে প্রথমে লিখুন—হারাধন সিঙ্গিকেই চিঠিখান লিখুন, যে, নমস্কারপূর্বক নিবেদনমিদং, আপনাদের এত নম্বর চালান যথাসময়ে হস্তগত হইয়াছে— আপনারা এতবার লেখালেখি সত্ত্বেও টাকায় এক আনা করিয়া আড়তদারি বজায় রাখিয়াছেন দেখিয়া— এইসময় গদাধরের পত্তনী মৌজা মুন্দরপুরের একটি প্রজা ঝুড়িতে কয়েকটি ছোট-বড় কপি আনিয়া গদির আসনে নামাইতে, চিঠিলেখানো বন্ধ করিয়া গদাধর তাহার দিকে চাহিয়৷ বলিলেন–কিরে রতিকান্ত ? ভালো আছিল ? এতে কি ? —আজ্ঞে, কয়েকখানি কপি আপনার জঙ্কি এনেলাম—এবার দশ কাঠা জমিতে কপি হয়েছে, তা বিষ্টির অবানে সে বাড়তি পারলে না বাৰু। তার ওপর নেগেচে কাচকুমুরে পোকা—পাতা কেটে-কেটে ফ্যালায় রোজ সকালে-বিকালে এত-এত— রতিকাস্ত হাত দিয়া কীট দ্বারা কর্তিত পাতার পরিমাণ দেখাইল । গদাধর বলিলেন—না, তা ফুল মন্দ হয় নি তো বাপু, বেশ ফুল বেঁধেচে। যা বাড়ীতে দিয়ে এসে একটু গুড়-জল খেয়ে আয় গে বাড়ী থেকে । ভড় মহাশয় বলিলেন—তারপর আর কি লিখবো বাৰু ? —আজ থাক ভড়মশায়। সন্মে হয়ে এলো। আমার একটু কাজ আছে মুখুয্যে-বাড়ী। রতিকান্ত, আয় আমার সঙ্গে-ভড়মশায়, কপি একটা রাখুন। —না, না বাৰু, আপনার বাড়ীতে থাকৃ—আমি আবার কেন— —তাতে কি ? আমরা কত খাবো ? রতিকান্ত, দাও একখানা ভালো দেখে ফুল নামিয়ে । নিয়ে যান না ! রতিকান্তকে লইয়া চলিয়। যাইবার পূৰ্ব্বে গদাধর বলিলেন-ক্যাশটা তাহলে আপনি নিয়ে যাবেন সঙ্গে ক’রে ? না, আমি নিয়ে যাবো ? —তাহলে বাবু আর-একটু বলতে হয়। ক্যাশ বন্ধ করি এবার, মিলিয়ে দিই। —বসি । —বাবু, ওবেলা ও আট আনা হাওলাতে কার নামে লিখবো ?