পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/১৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

38e বিভূতি-রচনাবলী —দরকার আছে। নিৰ্ম্মলবাবুর সঙ্গে তোমাকে মিশতে দেবো না আমি। —আমি কি ছেলেমানুষ ? —ছেলে-বুড়োর কথা নয়। সে এসে কেবল টাকা ধার করে আর দেয় না । গায়ের সকলের কাছেই নিয়েছে, এমন কি মিনির বাপের কাছ থেকেও সাতটা টাকা নিয়ে গিয়েচে । তোমার কাছ থেকে তো অনেক টাকাই নিয়েছে। কিছু দিয়েচে ? 動 —দিক না-দিক, তোমার সে-সব খোজে দরকার কি ? তুমি মেয়েমানুষ—রাইরের সব কথায় থেকে না, বলচি ! নিৰ্ম্মলের ব্যাপার লইয়া সেদিন ভড়মশায় আড়তেও গদাধরকে দু’একটা কথা বলিয়াছিল। গদাধরজেদীলোক—যাহাকে লইয়া ঘরে-বাহিরে তারউৎপীড়ন, তাহাকেতিনি কখনইত্যাগ করিতে পারেন না—করিবেনও না। আসলে নিৰ্ম্মল মুখুয্যে এ-গ্রামের yহরি গাঙ্গুলির জামাই। শ্বশুরকুল নিস্থল হওয়াতে বর্তমানে শ্বশুরের সম্পত্তি উত্তরাধিকারস্থত্রে ভোগদখল করিতেছে। লোকটি সৰ্ব্বদাই অভাবগ্রস্ত, এ-কথাও ঠিক – কারণ, আয়ের অনুপাতে তাহার ব্যয় বেশি। নিৰ্ম্মল মুখুয্যে আসিয়া বাহির হইতে স্থাকিল–গদাধর, অাছে না কি হে ! আসবো ? গদাধর উত্তর দিবার পূর্বেই অনঙ্গ বলিল—উত্তর দাও তো দেখিয়ে দেবো মজা ! গদাধর হাসিয়া ফেলিলেন। বলিলেন—তোমার সব তাতেই ভয়! জবাব দিলে আমাকে খেয়ে ফেলবে না তো ! দৃঢ় চাপা-কণ্ঠে অনঙ্গ বলিল—ন। —ভদ্রলোকের ছেলে বাড়ীতে এসেছে••• * —আক্ষক । ইহাদের কথা শেষ হইবার পূর্বেই নিৰ্ম্মল মুখুয্যে একেবারে ঘরের দোরের কাছে স্বামীস্ত্রীর মধ্যে আসিয়া পড়িল । —কি গো বৌ-ঠাকরুণ, আমাদের বাড়ী যাওয়া একেবারে ছেড়ে দিলে যে--রাগ করলে না কি গরীবদের ওপর ? অনঙ্গ নিৰ্ম্মলের কথার ভাবে হাসিয়া বলিল—কেন, রাগ করবে। কেন ? —কাজ দেখেই লোক লোকের বিচার করে—তোমার কাজ দেখেই বলটি । —না, রাগ করি নি। —শুনে মনটা জুড়,লো । —থাকৃ, আর ঠাট্রায় কাজ নেই! —এটা ঠাট্টা হলো বৌ-ঠাকরুণ ? যাকৃ, এখন কি খাওয়াবে খাওয়াও তো সন্দেবেলা” —সন্দেবেলা মানে, রাত্তিরে ! —রীত একে বলে না । এর নাম—সনে । —কি আর খাওয়াবো ? ঘরে কি-বা আছে । আচ্ছা বন্ধন, দেখি । গঙ্গাধর স্বপ্তির নিশ্বাস ফেলিয়া বঁচিলেন । দু'জনের মধ্যে একটা মিটমাট হইতে দেখিয়া