পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/১৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দম্পতি S8> নিৰ্ম্মলের দিকে চাহিয়া বলিলেন-কি মনে ক’রে, এখন বলো ? তোমার সঙ্গে অনেক কাল দেখা নেই। —ব্যস্ত ছিলাম ভাই, আমাদের খেটে খেতে হয় । —আমাদেরও উঠোনে পয়সা ছড়ানো থাকে না—খুঁজে নিতে হয়। —আমাদের যে খুঁজলেও মেলে না, সেই হয়েচে মুলকিল ! —মনোবেলাটা বড় কাজ প’ড়ে গিয়েচে আজকাল, নইলে তোমার ওদিকে যেতাম । —আমারও তাই। নইলে আগেতো প্রায়ই আসতাম। —দ্যাথো ভাই নিৰ্ম্মল, একটা কথা তোমায় বলি। ডিষ্ট্রিক্ট বোর্ডে তোমার তো লোক আছে—আমায় কিছু কাজ পাইয়ে দাও না ? --নিজের কাজ ফেলে আবার পরের কাজ করতে যাবে কেন ? তাছাড়া ওতে বড় ঝঞ্চাট। —ঝঞ্ঝাট সদ্ধ করতে আর কি-টাকা রোজগার নিয়ে বিষয়। ওতে আমার অস্ববিধে হবে না। তুমি চেষ্টা করে না ? নিৰ্ম্মল কিছু ভাবিয়া বলিল—কিছু টাকা গোড়ায় ছাড়তে পারবে ? —কি রকম ? —তোমার কাছে আর ঢাকাঢাকি কি ? কিছু টাকা পান খাওয়াতে হবে, এই•••বোঝে। তো সব | —ক’ত ? —সে তোমায় বলবো। আন্দাজ, শ’ পাচেক—কিছু বেশীও হতে পারে । গদাধর সাগ্রহে বলিলেন—তুমি দ্যাথো ভাই নিৰ্ম্মল। এ-টাকা আমি দেবো—তবে আমার আবার পুষিয়ে যাওয়া চাই তো ! বুঝলে না, ঘর থেকে তো আর দেবো না ! —আমি সব বুঝি। সে হয়ে যাবে। যেমন দান, তেমনি দক্ষিণে। —কবে আমায় জানাবে ? ওরা কিন্তু টেণ্ডার কল করেচে—পনেরোই তারিখের পরে আর টেণ্ডার নেবে না । —তাহলে কাল আমি একবার যাই—গিয়ে দেখে আসি ৷ কি বলে ? —বেশ ভাই, তাই খাও। যাতে হয় বুঝলে তো ? তোমাকে আর বেশি কি বলবো ? এই সময় অনঙ্গমোহিনী দুখানি রেকাবিতে লুচি, আলুভাজা ও হালুয়া লইয়া ঘরে ঢুকিয়৷ দু'জনের সামনে রেকাবি ছুটি রাখিল । নিৰ্ম্মল হাসিমুখে বলিল—এই তো ! এতেই তো আমি বৌ-ঠাকরণকে বলি-চোখ পালটাতে নাপালটাতে এত খাবার তৈরীহয়ে গেল!”ত,এত লুচি কেন আমার রেকাবিতে। অনঙ্গ হাসিয়া বলিল—খান, ও ক’খানা আপনি পারবেন এখন খেতে । চা খাবেন তো? —তা এক পেয়ালা হলে মন্দ হয় না । স্বামীর দিকে চাহিয়া অনঙ্গ বলিল—তোমার কিন্তু দু পেয়ালা হয়ে গিয়েচে । তোমাকে আর দেবো মা ৷