পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/১৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

583 বিভূতি-রচনাবলী গদাধর বিমর্ষ ভাবে বলিলেন—তা যা হয় করে। তবে না হয় আধ পেয়াল দিও। —কিছু না—পিকি পেয়ালাও না। রাত্রে তারপর ঘুম হবে না—মনে নেই ? অনঙ্গ মুখ ঘুরাইয়া চলিয়া গেল । নিৰ্ম্মল বলিল—টাকাটার তাহলে যোগাড় ক’রে রেখো । —শ’-পাঁচেক তো ? ও আর কি যোগাড় করবো, গদির ক্যাশ থেকে নিলেই হবে। —নিজনামে হাওলাত লিখে । —তাহলে কাল একবার যাই, কি বলে ? —ই্যা যাবে বই কি—নিশ্চয় যাবে। অনঙ্গ চা লইয়া আসিল। গদাধরের জন্য আনে নাই, শুধু নিৰ্ম্মলের জন্য। গদাধর জানেন র্তাহার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত খুঁটিনাটি লইয়া স্ত্রী বড়ই নিৰ্ম্মম—এখানে হাজার চাহিলেও চী মিলিবে না। স্বতরাং তিনি এ-বিষয়ে আর উচ্চবাচ্য করিলেন না। নিৰ্ম্মল বলিল—চলো বৌ-ঠাকরুণ, একদিন সবাই মিলে আড়ংঘাটায় যুগলকিশোর দেখে আসি । —বেশ তো, চলুন না । গদাধর বলিলেন—সে এখন কেন ? জষ্টি মাসে দেখতে হয় তো —

  • * যুগল দেখিলে জ্যৈষ্ঠ মাসে পতিসহ থাকে স্বৰ্গবাসে ।

স্ত্রীর দিকে ফিরিয়া বলিলেন—অতএব তোমার যদি আমার সঙ্গে স্বৰ্গবাসে মন থাকে, তাবুলে— অনঙ্গ সলজ্জ মুখে বলিল—যাও, সব-তাতেই তোমার ইয়ে! আমরা এখুনি যাবে?— চলে না। পরে আবার জষ্টি মাসে গেলেই হবে । আমি কখনো দেখিনি—জষ্টি মাস পর্য্যন্ত বঁচি কি মরি ! নিৰ্ম্মল বলিল ও আবার কি অলুফুণে কথা ! মরবেন কেন ছাই ! বালাই•••ষাটু••• অনঙ্গ হাসিতে-হাসিতে চলিয়া গেল । নিৰ্ম্মল বলিল-আমিও ভাই এবার চলি, কাজ আছে, একবার শিবুর মায়ের কাছে যাবে। বুড়ী আজ ক'দিন ধরে রোজ ডেকে পাঠাচ্চে, তার ছেলের সন্ধান ক’রে দিতে হবে । দেখি গিয়ে । —ভালো কথা, তার আর কোনো সন্ধান পাও নি ? —সন্ধান আর কি পাবো ? কলকাতাতেই আছে, চাকরি খুঁজতে গিয়েচে। দুদিন পরে এসে হাজির হবে। এক্ষেত্রে যা হয়। মামার তাড়ায় আর বকুনিতে দেশ ছেড়ে পালিয়েচে । যেমন মামা, তেমনি মামি –এ বলে আমায় দ্যাখ, ও বলে আমায় স্তাখ ! —মাঝে পড়ে শিবুর মা’র হয়েচে বিষম দায়। ভাইয়ের বাড়ী প'ড়ে থাকে, সহায় সম্পত্তি নেই—এই বয়সে যারই বা কোথায় ? তার ওপর ছেলেটির ওই ব্যাপার । --আচ্ছা, তাহলে আসি ऊॉरें !