পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/২১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দম্পতি వీగి: বলবো বলুন, এখানে আমার কে আছে এক আপনি ছাড়া ! অনঙ্গ আঁচল দিয়া চোখের জল মুছিল । ভড়মশায় চিস্তিত-মুখে বলিলেন—তাই ভো, আমাকে বললেন মা—ভালো হলো। এত কথা তো আমি কিছুই জানতাম না। এখন বুঝতে পারচি নে কি করা যায়। আমারও তো যাবার সময় হলো । অনঙ্গ বলিল—আপনি আমাদের ছেড়ে চলে যাবেন না ভড়মশায় । কলকাতায় আপনার যত অসুবিধাই হোক, ওঁকে এ-অবস্থায় ফেলে আপনি যেতে পাবেন না। আমার আর কেউ নেই ভড়মশায়—কে ওঁকে দেখে । এখানে ওই শচীন ঠাকুরপো হয়েচে ওঁর শনি। আর ওই নিৰ্ম্মল—ওদের সঙ্গে মিশেই এ-রকম হয়েচেন—আমাকে এ-আথান্তরে ফেলে আপনি চলে যাবেন না । —আচ্ছা বৌ-ঠাকরুণ, এ-সব কথা আর কারো কাছে আপনি বলবেন না। আমি না হয় এখন দেশে না যাবে।—আপনি কাদবেন না। চোখের জল মুছে ফেলুন—সতীলক্ষ্মী আপনি, হাতে ক’রে বিয়ে দিয়ে ধরে এনেচি—মেয়ের মত দেখি। আপনাদের ফেলে গেলে ধৰ্ম্মে সইবে না। দেখি, কি হয়—অত ভাববেন না । ভড়মশায় বিদায় লইলেন। গদাধর শোভার বাড়ী গিয়া শুনিলেন, সে এই মাত্র স্টুডিও হইতে ফিরিয়া খাইডে বসিয়াছে। স্বতরাং তিনি বাহিরের ঘরে বসিয়৷ রহিলেন। একটু পরে শোভা চুকিয় একটা প্লেটে গোটাকয়েক সাজা পান গদাধরের সামনে টিপয়ে রাখিয়া, তাহা হইতে একটা পান তুলিয়া মুখে দিল। কোনো কথা বলিল না। গদাধর বলিলেন—বোলে৷ শোভা, তোমার কাছে একটা কাজে এসেছিলাম। শোভা নিজের ইজিচেয়ারটাতে বসিয়া বলিল—কাজ কি, তা তো বুঝতে পেরেচি, তার উত্তরও দিয়েচি সেদিন । —.স কাজ লয় শোভা । বড় বিপদে পড়ে এসেচি তোমার কাছে। একজনকে চেক দিয়েচি ছ'হাজার টাকার—কাল ব্যাঙ্কে চেক দাখিল ক'রে ভাঙাবার তারিখ—অথচ টাকা নেই ব্যাঙ্কে । কালই ছ’হাজার টাকা বেলা দশটার সময় জমা দিতে হবে—অথচ আমার হাতে নেই টাকা! সব টাকা মোকামে আবদ্ধ। এখন কি করি—কাল মান যায়, ভাই তোমার কাছে এসেচি ! শোভা বিস্ময়ের সুরে বলিল—আমি কি করবো ? —টাকাটা এক মাসের জন্য ধার দাও—আমি হ্যাগুমোট দিচ্চি—মোকাম থেকে টাকা এলে শোধ ক’রে দেবো। এই উপকারটা কর আমার। বড় বিপদে পড়ে তোমার কাছে এসেচি। শোভা বলিল—আমি তো হ্যাগুমোটের ব্যবসা করি নে—মহাজনী কারবারও মেই