পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/২৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

३१e বিভূতি-রচনাবলী কারণ তাহলে ঠাকুরদাদা উদ্বিগ্ন হয়ে উঠবেন। —অ হরিশ ! বাড়ী এলি? অ হরিশ ! আমি মায়ের শিক্ষা মত বলতাম—না, এখনও আসেন নি বাবা । —আজ কখন কাছারি গেল ? আমাকে বলে গেল না ? আমরা উত্তর দিই নে । —অ হরিশ ! —ঠাকুরদা, তামাক সেজে দেব ? এটিও মায়ের পরামর্শ। ঐ একমাত্র উপায় ঠাকুরদাদাকে অন্যমনস্ক রাখবার । আমাদের বলতেন—বোস আমার কাছে । আমি, আমার ছোট ভাই নীলু ফুচু ও দুই বোন সরলা আর বিহু ঠাকুরদাদাকে ঘিরে বলি । —সবাই এসেছে ? -ऐँ । –বিমু এসেছে ? আমার কাছে এগিয়ে এসে বোস সব । শোন, স্বদরবনে এক শ ছাপ্পান্ন নম্বর লাটে আমার মনিবের কাছারি ছিল। পাইকপাড়ার রাজা ঈশ্বরচন্দ্র সিংহ । মস্ত বড় জমিদার । আমি যেখানে থাকতাম, সে কাছারির নাম ছিল গরানহাটির কাছারি। স্নদরী আর গরান কাঠের জঙ্গল কিনা, তাই নাম ছিল গরানহাটি । একবার নোনাতলার খালে আমাদের ডিঙি লেগেছে, মাঘ মাসের দিন, জলে সোন নেমেছে— —সে কি ঠাকুরদা ? 姊 —সোন মানে জোয়ার। বে-সোন মানে ভাটা—বে সোনে নৌকো চলে না সামনে, নোঙর করতে হয় ও-দিকির গাঙে। তারপর কি বলছিলাম ?... ওই হল মুশকিল। ঠাকুরদাদার কাছে গল্প শোনবার মুখ নেই, কেবল ভুলে যাবেন। —বলছিলেন সোন নেমেছে জলে— go —হঁ্য, তার পর দেখি এক মস্ত বাঘ জলে ভিপি পাশে জল খাচ্ছে। আমাদের সঙ্গে উজিরালি বিশ্বেস ছিল বড় শিকারী সে অমনি বন্দুকের চেঙ বাগিয়ে এক দ্যাওড় করলে। এক দ্যাওড়, দু দ্যাওড়, ব্যস, বাঘ উলটে পড়ল খালের জলে। হঁ্যা 'মনু ? -कि ? —তোর বাবা এল ? —না, এখনও আসেন নি । —গিয়ে দেখে এস দাদাভাই আমার । অ হরিশ ! --আসেন নি বাবা । গল্প বলুন ঠাকুরদা। —দেখে এস না দাদাভাই । –দেখতে হবে না, আসেন নি । এলে আপনার সঙ্গে কথা বলতেন না ?