পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/৩৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কুশল পাহাড়ী ©ፃፃ ললিত বল্পে-ভাই ! শোনো— --বড় বাঘ। রয়েল বেঙ্গল গয়ার জঙ্গলে যথেষ্ট । —তাড়াতাড়ি চলো— পাহাড়ে পাহাড়ে যেন প্রতিধ্বনিত হয়ে উঠলে সে আওয়াজ। খুব গম্ভীর আওয়াজ নয়, ঠিক তক্তা চেরার শব্দ করাতের কারখানায় বড় কলের করাতে তক্তা চিরচে । আমি বড় বাঘের এ ডাকের সঙ্গে সুপরিচিত । যখন আবার আমরা ফিরে এলাম বাংলোর ঘাটে, তখন রাত আড়াইটে । করণ সিং ঘরের দরজ বন্ধ করেচে বাঘের ভয়ে । তার ভয় যে অমূলক নয়, তার পরিচয় কিছু আগেষ্ট পেয়েচি । ডাকাডাকি করতে করণ সিং ও আর-একটা লোক দোর খুললে । অন্য লোকটা আমাদের সেলাম করলে। করণ সিং জানিয়ে দিলে, এ সেক্ট বালক চৌকিদারের চাচা । বল্লাম—কা নাম তুমহারা ? —মুনেশ্বর মাহাতে, হুজুর । —ঠিক হ্যায়। ভাত পাকায়া ? —হুজুর, ও তো দশ বাজনেকে অন্দর মে পাকায় লিখা । ভাত আউর মাস। খান। ঠাণ্ড হো গিয়া হুজুর । —কোই হরজ নেই। লে আও— —টেবুল মে পরিস করলে হুজুর ? —করে । করণ সিং, তুম্‌ খানা খায় ? —হাম তো চূড়া খালিয়া। আউর কুছ নেহি খায়েঙ্গে । আকণ্ঠ খাওয়া গেল । শেষ রাত্রে মাংস আর ভাত । তারপর একটু ঘুমিয়ে নেওয়া গেল । মুনেশ্বর বল্লে—হুজুর, এসব জায়গায় ভোরে তাড়াতাড়ি দোর খুলবেন না। অনেক সময় বাঘ ওং পেতে থাকে দোরের কাছে, যেমন দোর খোলা হয় অমনি মানুষকে নিয়ে পালায় । একবার হয়েছিল এ বাংলোয় । করণ সিং বল্লে—বাজে গল্প করো না । মতুষখেগে বাঘ না হলে আমন করে না । আমি বিহার ট্রান্সপোর্টে কাজ করচি “বিশ বছর । কত পাহাড় জঙ্গল ঘুরেছি। কখনো শুনিনি এমন কথা । মুনেশ্বর রেগে বল্লে—আপ লোক ক্যা জানতা ? মোটর সে ঘুম্বত হ্যায়, জঙ্গল কা হালচাল ক্যা মালুম হ্যায় আপলোগোক ? ছোড় দিজিয়ে ও বাৎ—আপলোক রহিয়ে ইহ পর দো পাচ রোজ, আপকে নেহি দেখলানে সকেঙ্গে তো জুর্মানা দেঙ্গে দশ রুপৈয়— জরুর— বেলা আটটায় দুজনে উঠলাম। তার আগেই মুনেশ্বর উঠে দোর খুলেচে, সুতরাং বাঘের ফাড়া থাকলেও কেটে গিয়েচে ।