পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/৪০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতি-রচনাবলী واس0bا জেলা বোর্ড তাদের সীমানার মধ্যের রাস্তাটুকু মেরামত করে দিতে রাজী হল। তাও ঠিক হল, নারানপুর ও আকাইপুর হাই স্কুলের ছেলেদের অৰ্দ্ধেক ভাড়ায় যাতায়াত করতে দিতে হবে । চব্বিশ পরগণা জেলা বোর্ড কিছুতেই রাজী হল না, অত বড় জায়গায় গিয়ে ধরাধরি করতে পারলেও না প্রতুল। রাম চাটুয্যের স্ত্রী বল্লে—লাইন তো বন্ধ রাখলে, রাস্তার কতদূর হল ? * > —যেখানে খুব খারাপ, সেখানে হয়ে গিয়েছে। চব্বিশ পরগণা না ক’রে দিলেও চলে যাবে একরকম । কিন্তু একটা কথা— —কি ? - প্রতুল মাথা চুলকে বল্লে—আর পাচশ টাকা দিতে হবে। আপনার পয়ে পড়ি খুড়িমা, আমাকে ভুল বুঝবেন না। টাকার দরকার হয়েছে কেন, বলি শুনুন । বেলের হাটের সামনে ব্যাপারীদের জিনিস রাখবার জন্যে একটা টিনের চালা তৈরী না ক’রে দিলে ওদের বড় অস্ববিধে হচ্ছে। যদি আমাদের তৈরী টনের চালাতে বসে, তবে আমাদের গাড়ীতেই যেতে হবে । তরকারির বাজরাতেই তো পয়সা । এ-বাদে একটা সঁাকো সারাতে হবে । তাতেও শ'খানেক টাকা খরচ হবে । রাম চাটুয্যের স্ত্রী খয়ে-বন্ধনে পড়েছেন বিবেচনা করলেন । এ টাকা না দিলেও চলবে না, আগের টাকাগুলো জলাঞ্জলি যায় তাহলে । দিতেই হবে । এ কি মুশকিলের কথা, প্রতুল কেবলই বলে টাকা দাও। ওকে এনে কি শেষ পর্য্যন্ত ভুল ক’রেই বসলেন ? কানাই দত্ত কি তাহলে ঠিক কথাই বলেছিল ? শেষ পৰ্য্যন্ত টাকা দিতে হল রাম চাটুয্যের স্ত্রীকে । বড় কষ্টেই এ টাকা দিলেন তিনি। সোনাদানা ঘরে আর এক কুঁচোও রইল না । দু'মাস ধরে বহু চেষ্টার পরে লাইন খুললে । অনেক দিন ধ’রে বিজ্ঞাপনের ফলে লোক জানাজানি হয়েছিল বেশ, সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীর ভিড় হ’তে লাগলো । হাটের চালা ক’রে দেওয়ার ফলে তরকারির ব্যাপারীদের এই বর্ষাকালে খুব সুবিধে হয়েছে। তারা সবাই বাসের খদ্ধের হয়ে উঠলো । সকাল বেলা। রাম চাটুয্যের স্ত্রী স্নান করে উঠে আহিকে বসবেন এমন সময়ে প্রতুল এসে দাড়ালো সামনে । রাম চাটুয্যের স্ত্রীর বুক কেঁপে উঠলো। আবার বুঝি টাকা চায়! প্রতুল পকেট থেকে একশো টাকার নোট বার ক'রে ওঁর পায়ের কাছে রেখে বল্পে—এই নিন। কাল প্রথম দিন লাইন খুলেছি । দিনের ক্যাশ । —এক দিনের ? —আরও বাড়বে | সামনের মাস থেকে বোধ হয় দেড়শো টাকা ক’রে দিতে পারবো । হাটের ব্যাপারীদের খুব ভিড় হচ্ছে । সামনের বছরে আর একখানা বাস কিনতে হবে টাকা