পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/৪২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কুশল পাহাড়ী 8 eo কলিকাতা আসিতেছেন, কিছু বোঝা গেল না। কোথা হইতে আসিতেছেন, তাহীও জানি না। ভিড়ের মধ্যে দেখি একদল সংকীৰ্ত্তন পার্টি চলিয়াছে, বোধহয় ভগবানকে অভ্যর্থনা করিবার জন্য । ভগবানকে অভ্যর্থনা করিবার জন্য সংকীৰ্ত্তন পার্টি কি হইবে ? কারো গঙ্গাযাত্রার সময় সংকীৰ্ত্তনের ব্যবস্থা করা হয় জানি, কিন্তু ভগবান যখন স্বয়ং হাওড়া স্টেশনে আলিতেছেন, তখন এর অপেক্ষা ভালো ব্যবস্থা কি করা যাইত না ? অতি কষ্টে প্লাটফর্মের ভিড় ঠেলিয়া সম্মুখভাগে আগাইবার চেষ্টা করিলাম। সঙ্গে সঙ্গে জওহরলালজির ট্রেন আসিয়া দাড়াইল । ইহার পর স্টেশন ভাঙিয়া পড়ে আর কি, বহুবিধ স্লোগানের সমবেত উচ্চকণ্ঠের উচ্চারণে । সাংবাদিক ও ফোটোগ্রাফারের দল দেখিতে দেখিতে পণ্ডিতজিকে ঘিরিয়া ফেলিল। তারপর সেই বিরাট জনতা তাহাকে লইয়া পথে নামিল এই পৰ্য্যন্ত দেখিলাম—ইহার পর কি ঘটিল না ঘটিল বলিতে পারিব না, কারণ আমি জওহরলালজির সে বিশাল শোভাযাত্রায় যোগদান করি নাই, ভগবানকে দেখিবার জন্য প্ল্যাটফর্মেই ছিলাম । দল চলিয়া গেল । প্ল্যাটফর্ম প্রায় খালি । সেই সংকীৰ্ত্তন পার্টি ছাড়। ভগবানকে অভ্যর্থনা করিবার জন্য কেহই উপস্থিত নাই গোটা প্ল্যাটফর্মে । একজন রোগ, গোপদাড়িকামানে লোক আমার কাছে আসিয়া বলিল—মশায়, আজ লাকি ভগবান আসচেন ? —এই রকমই তো কাগজে লিখেচে । - —কোন প্ল্যাটফর্মে, জানেন ? —পাঞ্জাব মেলে তো আসচেন । এনকোয়ারি ‘আপিসে একবার জিগ্যেস করে আস্কন না ? —উঃ মশাই, যা ভিড়ের কাও ! কি কষ্টে যে হাওড়া পুলটুকু ছাড়িয়ে এসেচি! —প্রসেশন কতদূর গেল ? o —জওহরলালজির মোটর তো স্ট্র্যাণ্ড রোড দিয়ে হাইকোর্ট-মুখে চলে গেল দেখলাম— আর কিছু বলতে পারি নে। বসুন, এনকোয়ারি আপিসে জিগ্যেস করে আসি । লোকটা সেই যে চলিয়া গেল, আর ফিরিল না। অন্তত আমি আর তাঁহাকে দেখিলাম না । মিনিট কুড়ি পরে পাঞ্জাব মেল আসিয়া সশব্দে স্টেশনে প্রবেশ করিল। বিশেষ কোনো দলকে আগাইয়া যাইতে দেখিলাম না, সেই ক্ষুদ্র সংকীৰ্ত্তন পার্টি ছাড়া, তাহারা ততক্ষণ খোল ও খঞ্জনীর সাহায্যে উদও রেঢ়ো কীৰ্ত্তন জুড়িয়া দিয়াছে। প্ল্যাটফর্মময় ফুল ও ছেড়া ফুলের মালা ছড়ানো । কিছুক্ষণ পূৰ্ব্বে পণ্ডিতজির উদ্দেশে যে