পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/৪৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কুশল পাহাড়ী §ey চোদ্দ বছর পরে। কিন্তু তার গালের আচিল আমার অত্যন্ত পরিচিত, শৈশবের আবেষ্টনীতে র্তাকে নিয়ে গিয়ে ফেললে । রাঙা খুড়ীমার কান্নাভরা চোখ মনে এল, কি জানি কেন ওঁদের সেই জঙ্গলে-ভরা সিংদরজাটার কথা মনে হল । আমিও দেশের বাড়ী ছেড়েচি পাচ ছ' বছর । হঠাৎ এভাবে বাল্যের হরিকাকার দেখা পেয়ে সারনাথ ভুলে গেলাম, বন্ধুবান্ধবদের ভুলে গেলাম, গণেশ মহল্লায় প্রসিদ্ধ রামলীলা উৎসবের কথা ভুলে গেলাম । বন্ধুদের বল্লাম—তোমরা সারনাথ যাও, আসবার সময় আমায় নিয়ে নিও—কিংবা আমি আজ না হয় পাড়েপুর থেকেই যাই— ওরা বল্লে—কোথায় থাকবি এখানে ? —একটা হোটেল কিংবা সরাই— —না, সে সবে দরকার নেই। আচ্ছা তুমি গল্প কর দেশের লোকের সঙ্গে। যাবার সময় যেও | ওরা চলে গেল। নীল প্রশাস্ত আকাশ। বড় আমগাছের ছায়াভর বীথি। বুদ্ধদেবের চরণপূত সারনাথ কাছে। সেই দোর্দণ্ডপ্রতাপ মাতাল হরিকাকা সন্ন্যাসী । কি অদ্ভূত লাগছিল আজকের এই দিনটা । আমি আমতলায় বসে পড়লাম। বৃদ্ধ সাধু বল্লেন—তুমি এখানে কি ভাবে ? —সারনাথ যাচ্ছিলাম বন্ধুদের সঙ্গে । —কি কর ? —টেকনিকেল স্কুলে মাস্টারি করি বালিগঞ্জে । আপনি কি এখানে থাকেন ? —না । দিন পনেরো আগে এসেচি কাশী থেকে । কত কথা মনে হচ্ছিল । কোনটা আগে বলবো, কোনটা জানতে চাইব ? রাঙা কাকীমার মৃত্যুসংবাদ দিলাম। হরিকাকার মুখের ভাবের কোন পরিবর্তন হল না। চুপ করে রইলেন। বল্পেন—তোমার বাবা কেমন আছেন ? y —মারা গেছেন আজ সাত বছর । 尊 —গায়ের আর সবাইকার কি খবর ? মোটামুটি বললাম যতদূর সঙ্কর । গত পাঁচ বছরের খবর আমিও ঠিকমত জানি না বললাম। বেশী কিছু কথা হবার পূৰ্ব্বেই বন্ধুরা পাছে এসে পড়ে—এই ছিল আমার ভয় । কোন কথাটা আগে জিগ্যেস করবো ? হঠাৎ বল্লাম—কেমন আছেন হরিকাকা । হরিকাকা ধীরে ধীরে বল্পেন—খুব শাস্তিতে, খুব আনন্দে আছি বাবা । তারপর কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বল্লেন—অনেক অপরাধ করেছিলাম জীবনে না বুঝতে পেরে। তিনি দয়াময়, সব ক্ষমা করবেন। আমরা তার সন্তান । তিনি না ক্ষমা করলে शांछिह ८कांथांध्र । —এখন এখানেই থাকবেন ?