পাতা:বিশ্বকোষ একাদশ খণ্ড.djvu/৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পর্তুগীজ অতিরিক্ত श्रृंगा দিয়া খরিদ করিতে লাগিলেন । তাছাতে রাজপুরুষগণ গিয়া রাজাকে জানাইল যে, ‘পর্তুগীজের বাণিজ্য আশায় এ দেশে আসেন্নাই, তাহা হইলে এরূপ অল্পায় মূল্য দিয়া জিনিস খরিদ কারত ন। নিশ্চয়ই তাহীদের চুরভিসন্ধি আছে । রাজা রাজপুরুষগণের কথায় নির্ভর করিলেন না, তিনি দা-গামার নিকট একজন দূত পঠাইলেন ও র্তাহাকে রাজসভায় দেখা করিতে আদেশ করিলেন । প্রথমে দ-গামা রাজসভায় উপস্থিত হইতে সম্মত হন নাই, শেষে কালিকটরাজের পক্ষ হইতে তিন জন উচ্চপদস্থ নীয়র গিয়া রাজার অভিপ্রায় জানাইলে তিনি আসিতে সন্মত হন । দা-গামা উৎকৃষ্ট বেশভূষায় ও মহাআড়ম্বরে কালিকটের সভায় উপস্থিত হইলেন। তিনি মেলিদের অধিপতিকে যেরূপ নজর দিয়াছিলেন, সামরীয়াজকেও সেইরূপ নানাবিধ মূল্যবান দ্রব্য মঞ্জর দিয়া তাহার সত্তোষ বিধান করিলেন। পরদিন কালিকটরাজও বহু সামগ্ৰী পাঠাইয় ভাস্কো-দা-গামীর সম্মান রক্ষা করেন। আরবীয় বশিকগণ পুৰ্ব্ব হইতেই কোতোয়ালকে উৎকোচ দিয়া বশীভূত করিয়াছিল। পরদিন কোতোয়াল দা-গামাকে রাজার নিকট লইয়া যাইবার ছলে একটী দূরপল্লীতে লইয়া গিয়া বন্দী করিল। কেবল রাজার ভয়ে দা-গামার প্রাণসংহার করিতে পারিল না । কোতোয়াল দা-গামাকে জানাইল যে, যদি তাহার জাহাজে যত মলি অাছে, কুঠতে নামাইয় দেন, তাহ হইলে তাহার কোন বিপদের আশঙ্কা নাই ৷ দা-গামা তাহার সহকারী সেতুবলকে জাহাজে পাঠাইয়। তদীয় ভ্রাতাকে সংবাদ দিলেন এবং তাহাকে মাল উঠাইতে আদেশ করিলেন । নৌকা বোঝাই হইয়। মাল আসিতে লাগিল, তথাপি দা-গামা মুক্তি পাইলেন না। তাহার ভ্রাত। বলিয়। পাঠাইলেন, যদি শস্ত্র তাহাকে ছাড়িয়া না দেয়, তাহ। হইলে বন্দরে যত জাহাজ ও নৌক আছে, সমস্ত তিনি ধ্বংস করিয়া ফেলিবেন । কোতোয়াল এ কথা শুনিয়াই রাজাকে জানাইয়া পাঠাইলেন । রাজা অবিলম্বে দা-গামার প্রাণদণ্ডের আদেশ করিলেন। কিন্তু তাছার ব্রাহ্মণমন্ত্রী ও কোষাধ্যক্ষের অযুরোধে এ দারুণ আদেশ রহিত হইল। জাহাজ হইতে নিকোল কোএলহো দুইজন নায়রের সঙ্গে আসিয়া রাজাকে জ্ঞাপন করিল যে, যদি তিনি দা-গামাকে মুক্তিদান না করেন, তাহা হইলে পর্তুগালরাজ বিশ্বাসঘাতকতার জন্ত প্রতিশোধ লইতে অগ্রসর হইবেন । রাজা ব্রাহ্মণমন্ত্রিগণের পরামর্শে অবিলম্বে দা-গামাকে মুক্তি দিতে আদেশ করিলেন ও বলিলেন "দুষ্ট ব্যক্তির পরামর্শে এরূপ অন্তীয় কাৰ্য্য হইয়াছে, তজ্জন্ত তিনি অতিস্থঃখিত হইয়াছেন।” ভাস্কো-দা-গামা আর কালবিলম্ব [ s ] পর্তুগীজ না করিয়৷ কালিকট পরিত্যাগ করিলেন । ইহাও জামাইয়৷ গেলেন যে, এক দিন না এক দিন, তিনি ছবৃত্ত মুর ( আরব )দিগকে ধবংস করিতে আসিবেন । * , , কল্পনুরের নিকট তাহার জাহাজ পৌছিলে, তথাকার রাজা তাহার যথেষ্ট সম্বৰ্দ্ধনা করেন ও তাহার জাহাজে যত দ্রব্য ধরিতে পারে, তাহারও অধিক গোলমরিচ ও দায়চিনি পাঠাইয়া দিলেন। কল্পনুররাজ এক সোণার পাতে পত্র লিথিয় পর্তুগালরাজের সহিত মিত্রতাস্বত্রে আবদ্ধ হন । কল্পনুররাজের আতিথেয়তায় দা-গামা বিমুগ্ধ হইয়াছিলেন। ১৪৯৮ খৃষ্টাব্দে ২০এ নবেম্বর তিনি কল্পনুর পরিত্যাগ করেন । গোয়ার স্ববাদার পর্তুগীজ জাহাজের সংবাদ পাইয়। ঐ সকল জাহাজ আটক করিয়া তালিবার জন্য তাছার পোতাধ্যক্ষ একজন জুকে সদলে পাঠাইয়া দিলেন । পর্তুগীজদিগের হাতে তাহাকে যথেষ্ট নিগ্রহভোগ করিতে হইয়াছিল । প্রত্যাগমনকালে নানাস্থান দর্শন করিয়৷ ১৪৯৯ খৃষ্টাব্দে ১৮ই সেপ্টেম্বর, দা-গামী সদলে লিসবন নগরে পৌছিলেন । পর্তুগালরাজ র্তাহাকে মহা-সমাদরে গ্রহণপুৰ্ব্বক বহু উপটৌকন প্রদান এবং উচ্চ সম্মানে ভূষিত করিলেন । তৎপরবর্ষে দী-গীমার অনুরোধে পেদ্রেী-অল্বরেজকেব্রাল কালিকটে বাণিজ্যস্থাপন করিবার জন্ত প্রেরিত হইলেন। এ যাত্রায় কেব্রীলের সঙ্গে যুদ্ধোপযোগী ১৩ থানি বৃহৎ জাহাজ, প্রভূত যুদ্ধোপকরণ, রাজযোগ্য বহু উপহারদ্রব্য, তৎকালের প্রধান ও বিখ্যাত নাবিকগণ এবং ১২ ০০ লোক ছিল । তাহার দলস্থ প্রধান ব্যক্তিগণের মধ্যে বার্থলসিউ-দিদিয়াজ, দা-গামার সহযাত্ৰী নিকোলা কোএলছে ও দোভাষী গাম্পার’ ছিলেন । ১৫০০ খৃষ্টাব্যে ৯ই মার্চ কেব্রাল জাহাজ ছাড়িলেন । এ যাত্রায় তিনি ব্ৰেজিল প্রভৃতি কএকটা নুতন স্থান আবিস্কার করেন। ভারত-উপকূলে উপস্থিত হইবার সময়, কাম্বে ( খন্তাৎ ) দেশস্থ ‘গোগো’ নামক বন্দর র্তাহার সর্বপ্রথম নয়নগোচর হয়। তথা হইতে উপকূল ধরিয়া কেব্রাল অঞ্জদ্বীপে (Anjediva) আগমন করেন। এখানে মাঝি মাল্লা । দিগকে একটু বিশ্রাম করিতে দিয়া জাহাজগুলির অবস্থা আগাগোড়া পরীক্ষা করিলেন। ৩০এ আগষ্ট তারিখে ( লিস্বৰূ পরিত্যাগের প্রায় ৬ মাস পরে ) কালিকট দর্শন পাইলেন । যথাকালে তিনি সামরীরাজের নিকট উপযুক্ত লোক পাঠাইয়। বাণিজ্যস্থাপনের জন্ত র্তাহার সাহায্য ও অসুমতি প্রার্থনা (১) এই গাস্পারই গোয়াধিপের পোতাধ্যক্ষ সেই জু। দ-গামার-হাতে বন্দী হইয়া খৃষ্টানধৰ্ম্ম গ্রহণ করেন ও তাহার নাম হয় গাম্পার দা-গামা।