পাতা:বিশ্বকোষ একাদশ খণ্ড.djvu/১৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পাতঞ্জল দর্শন [ ১৯৫ ] পাতঞ্জলদর্শন তাহাদের সহিত সন্তাষণাদি করা যায় । যোগী প্রতিভার প্রতি চিত্তসংযম করিলে সমস্তই বিদিত হইতে পারেন । সংযমদ্বার। ইত্যাদি প্রকার সামর্থ্য সকল লাভ হইয়া থাকে । বহির্বস্ততে আকল্লিত মনোবৃত্তির নাম মহাবিদেহ, এই মহাবিদেহ নামক ধারণাবিশেষে সংযমী হইলে প্রকাশের অtবরণ ক্ষয় হইয়া যায়। প্রত্যেক ভূতের স্থলস্বরূপ, স্বক্ষ, অস্বয়িত্ব ও অর্থবত্ত্ব এই পঞ্চবিধ রূপ বা অবস্থাবিশেষ আছে। ইহার প্রতি সংযম করিতে পারিলে ভূতজয় হইয়া থাকে। ইহাকে মহাভূত জয় ও কহে । অষ্টুমিঙ্কি ও তল্লাভের উপায় । মহাভূত জয় হইলে অণিমাদি অষ্টসিদ্ধি বা অষ্টশ্বৰ্য্য লাভ হয় । অণিমা, লখিম, মহিমা, প্রাপ্তি, প্রাকাস্য, বশিত্ব, ঈশিত্ব এবং যত্র কাম বসায়িত, এই ৮ প্রকার মহাসিদ্ধির নাম ঐশ্বৰ্য্য। ঈশ্বরের এবংবিধ স্বতঃসিদ্ধ অষ্ট মহাগুণ আছে, সেই সকল গুণ বা তৎসদৃশ গুণ সাধনবলে অস্ত আত্মাতেও আবিষ্ট হয়, সুতরাং ঐ সকল মহা গুণ ঐশ্বৰ্য্য নামে অভিহিত । সংযমদ্বারা যদি ভূতের প্রাগুক্ত, স্থলরূপ জয় করা যায়, তাহ হইলে তস্থার প্রথমোক্ত চতুৰ্ব্বিধ মহাসিদ্ধি, সংযমদ্বারা যদি প্রাগুক্ত ভূতের স্বরূপ অবস্থা সাক্ষাৎ করা যায়, তাহ হইলে প্রাকামা নামে মহাসিদ্ধি, ভূতসমূহের সুগন্ধপ বিজিত হইলে বশিত্ব নামে মহাসিদ্ধি, অস্বয়র পটী জিত হইলে ঈশিত্ব সিদ্ধি এবং অর্থবত্ত্ব স্বরূপ জয় হইলে তদ্বারা যত্র-কামাবসায়িত নামে চরম ঐশ্বর্য্য লাভ হয় । অণিমাসিন্ধি অtয়তনে বা প্রমাণে বৃহৎ হইলেও সংযমবলে অণু হইবার শক্তি। এমন কি যোগী অণিমাশক্তি লাভ করিলে সুর্য্য মরীচি অবলম্বন করিয়া সুর্য্যলোকে গমন করিতেও সমর্থ হন । লঘিমা গুরুভার হইলেও অতিশয় লঘু হইবার সামর্থ। মহিমা ক্ষুদ্র হইয়াও পতাদি প্রমাণ হইবার শক্তি । ইহাকে কেহ কেহ গরিমা সিদ্ধি বলিয়া থাকেন। প্রাপ্তি অর্থাৎ ইচ্ছামাত্রে দূরস্থ বস্তুকে নিকটে লাভ করিবার সামর্থ্য। প্রাকাম্য ইচ্ছাশক্তির অব্যাঘাত, মনে যখন যে ইচ্ছা হইবে, সেই ইচ্ছ। পুরণে সামর্থ । বশিত্ব ভূত ও ভৌতিক সকল পদার্থকে বশীভূত করিবার শক্তি । ঈশিত্ব সকল ভূতাদি পদার্থের প্রক্তি কর্তৃত্ব করিবার শক্তি। যাত্র-কামাবসায়িত্ব সত্যসঙ্কল্পত, ভূত ও ভৌতিক বস্তুর প্রতি তাহার যথন যে শক্তির উদ্দেশে সঙ্কল্প ধারণ করেন, সে সকল বস্তু তখনই তদ্রুপ শক্তিবিশিষ্ট হওয়া । যোগী ইহার বলে বিষকে অমৃত এবং অমৃতকে বিষ করিতে পারেন । এই অষ্ট মহাসিদ্ধি লাভ হইলে তৎসঙ্গে আরও দুইটী সিদ্ধি হয়। ভূত গুণ দ্বারা তাহীদের শারীরিক ক্রিয়ার প্রতিবন্ধক না হওয়া এবং শরীরসম্পত্তি উত্তম হওয়া, এই স্কুইট সিদ্ধি কায়সম্পৎ ও কায়িক ধৰ্ম্মের অব্যাঘাত নামে প্রসিদ্ধ। রূপ, লাবণ্য, বল, বজ্ৰ তুল্য দৃঢ় শরীর বা বেগশালিত। প্রভৃতি শারীরিক গুণবিশেষের নাম কায়সম্পদ । যোগী ইন্দ্রিয়াদি জয় দ্বারা যখন প্রকৃতি ও পুরুষের পার্থক্যজ্ঞান অমুভব করেন, তখন তাহার অবিস্তা নষ্ট হইয়া যায় এবং কৈবল্য ও স্বরূপ প্রতিষ্ঠাক্রপ স্থিতি প্রসাদ লাভ হয় । সুতরাং তখন তিনি মুক্ত বা কৃতকৃত্য হইয় থাকেন। চtfর প্রকায় যোগীর লক্ষণ । যোগ সিদ্ধ হইবার পূৰ্ব্বে নানা প্রকার বিম্ব ও প্রলোভন আসিয়া উপস্থিত হয়, যোগী তাহতে প্রলুব্ধ বা বিল্লভয়ে যোগ পরিত্যাগ করিবেন না । যোগ অবস্থা অনুসারে চারি প্রকার । তদনুসারে তাহীদের ভিন্ন ভিন্ন নাম হইয়াছে যথা – প্রথমকল্লিক, মধুভূমিক, প্রজ্ঞাজ্যোতি ও অতিক্রাস্তভাবনীয় । যtহার কেবল যোগtভ্যাসে রত, যোগ তাহীদের অবিচলিত বা দৃঢ় হয় নাই। সংযমাভ্যাসে রত থাকিয়া যাহার ংযমকালে কোনরূপ সিদ্ধি দেখিতে পান না, কেবলমাত্র তাহীদের অল্প জ্ঞানালোক প্রকাশিত হয় । এতাদৃশ যোগীর নাম প্রথমকল্লিক। যাহার এই অবস্থা অতিক্রম করিয়া মধুমতী নামে অবস্থা পাইয়াছেন, পূৰ্ব্বোক্ত ঋতত্ত্বর নামে প্রজ্ঞ। জয় করিয়া ভূত ও ইঞ্জিয়দিগকে বশীভূত করিয়াছেন, তাহাদিগকে মধুভূমিক যোগী কহে । যাহার এই অবস্থ৷ অতিক্রম করি। দেবগণের অক্ষোভ্য হইয়াছেন এবং পুৰ্ব্বোত্ত স্বার্থসংযমবিষয়ে সিদ্ধ হইবার জন্ত তৎপর আছেন, তাহীদের নাম প্রজ্ঞাজ্যোতি । যাহার এই অবস্থা অতিক্রম করিয়া তাত্যধিক বিবেক জ্ঞানসম্পন্ন হইয়াছেন এবং যাহাঁদের সমাধিকালে কোনরূপ বিমাশঙ্ক। উদ্ভব হয় না, তাহীদের নাম অতিক্রান্তভাবণীয় । এই চতুৰ্ব্বিধ যোগীর মধ্যে যাহার প্রথমকল্লিক, তাহার কোন সিদ্ধপুরুষ বা দেবদর্শন পান না । সুতরাং দেবগণ কর্তৃক তাহীদের অীমন্ত্রণ বা প্রলোভনের সস্তাবম নাই । দেবগণ কেবল পুৰ্ব্বোৰু মধুভূমিকাদি ত্ৰিবিধ মোগদিগকেই প্রলোভিত ও আমন্ত্ৰিত করিয়া থাকেন । যোগিগণ সেই সকল দিবাভোগ ও অদ্ভুত পদার্থ সকল দর্শন করিয়৷ বিমোহিত হইলে যোগভ্ৰষ্ট হইবেন । তাহাদের যোগারাঢ় অবস্থায় কোন প্রকার অদ্ভুত বা অলৌকিক দৃপ্ত দেখিয় তাহাতে মুগ্ধ হওয়া বিড়ম্বন মাত্র। কেননা তাহা হইলে তাঁহাদেয় যে সংসার, সেই সংসারই থাকিবে । কৈবল্যলাভের আশী মুদুরপরাহত হইবে । ক্রমে যোগীর তাল্পক জ্ঞান লাভ হয়, সেই জ্ঞান সংসার