পাতা:বিশ্বকোষ একাদশ খণ্ড.djvu/২২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পান্না - রোঁহিৰ্ণেয়, সোবর্ণ, গরুড়োগীর্ণ, বুধরত্ন, গরুড়, গরলারি। পায়ার বর্ণ শুকপক্ষীর পক্ষসদৃশ, স্নিগ্ধ, লাবণযুক্ত ও সুনিৰ্ম্মল । ইহার মধ্যভাগ স্বক্ষমৃবর্ণচূর্ণ পরিপূরিত বলিয়া বোধ হয় । কিন্তু এ লক্ষণ সকল পান্নায় থাকে না। পাল্লার উৎপত্তি ও অাকর সম্বন্ধে গরুড়পুরাণের ৭১ অধ্যায়ে এইরূপ লিখিত আছে,— সপাধিপতি বাসুকি দৈত্যপতির পিত্তগ্রহণ করিয়া যখন আকাশপথে গমন করিতেছিলেন, তখন পক্ষীশ্রী গরুড় বাসুকিকে প্রস্থার বা গ্রাস করিবার জল্প উদ্যত হইলেন । বাসুকি তৎক্ষণাৎ সেই পিত্তরাশি তুরস্কদেশের পাদপীঠস্বরূপ বা প্রত্যস্ত পৰ্ব্বতের নালিকাবন-গন্ধীকৃত উপত্যক প্রদেশে নিক্ষেপ করিলেন । এই পিত্তের পতনের পর তৎসমীপস্থ পৃথিবীর সমুদ্রতীরবর্তী স্থানসকল মরকত মণির ( পাল্লার ) আকর হইল। ( গরুড়পু” ) ডাক্তার রামদাস সেন বলেন, "পিত্তের বর্ণ সবুজ, পান্নার বর্ণও সবুজ। এই উপমা উপলক্ষ্য করির রূপকপ্রিয় পৌরাশিকের অমুরের পিত্তে পাল্লার জন্ম হইয়াছে, এইরূপ বর্ণনা করিয়াছেন এবং তুরস্কদেশের সমুদ্রতীরবর্তী পৰ্ব্বত ও উপত্যকায় তাহার অাকর অাছে, ইহাও নির্ণয় করিয়াছেন।” পান্নার গুণ —যে সকল সপবিষ ঔষধ বা মন্ত্রদ্বারা নিবারিত না হয়, পান্নাদ্বারা তৎসমুদয় উপশান্ত হয়। ইহা নিৰ্ম্মল, গুরু, কান্তিযুক্ত, পিত্তকারক, হরিদ্বর্ণ ও রঞ্জক। পাল্লাধারণ করিলে সৰ্ব্বপাপ ক্ষয় হয় । রত্নতত্ত্ব-বিশারদ পণ্ডিতগণের মতে পান্ন। ধনধান্তাদি বৃদ্ধি বিষয়ে, যুদ্ধে এবং বিষয়োগনাশকরণে অতি C3 || পাল্লার দোষ।-রূক্ষ বা অস্নিগ্ধ পান্না ধারণ করিলে পীড়া, বিস্ফোটপান্ন। ( অর্থাৎ যাহার একদেশ পীতবর্ণ ও যাঁহাতে ফুসকুড়ির দ্যায় সুগ্ম সুহ্ম বিন্দু আছে) ধারণ করিলে শস্ত্রাঘাতে মৃত্যু, পাষাণ-খণ্ডযুক্ত পান্না ধারণ করিলে ইষ্টনাশ, মলিন পাল্লাধারণ করিলে নানা ব্যাধির উৎপত্তি, কঁকিল্লারদার পান্না ধারণ করিলে পুত্রনাশ, কান্তিহীন পায়। ধারণ করিলে জন্তু ও বহ্নিভয় এবং বিরুদ্ধবর্ণযুক্ত পান্নাধারণ করিলে মৃত্যুভয় জন্মে । পান্নার ছায়। --পাল্লার অtটপ্রকার ছায়া লক্ষিত হয় । যথা— ময়ুরপুচ্ছের স্থায়, নীলকণ্ঠপক্ষীর গুtয়, হরিদ্বর্ণ কাচের ন্যায়, শৈবালের স্থায়, খস্তোতপৃষ্ঠের ন্যায়, শুকশিশুর ন্যায়, নবদুৰ্ব্বদলের ন্যায় এবং শিরীষ কুমুমের ন্যায় । এই অষ্টবিধ ছায়াযুক্ত পাল্লাই সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ । পাঞ্জার পরীক্ষা।-রত্নতত্ত্ব-বিশারদ পণ্ডিতগণ বলেন যে, পাল্লা কৃত্রিম কি অকৃত্রিম পরীক্ষা করিতে হইলে প্রস্তরে ঘর্ষণ করিতে XI «ዓል [ २२4 1 পান্না হয়। ঘর্ষণ করিলে কৃত্রিম পান্না ভাঙ্গিয়া যাইবে, অকৃত্রিম পাল্লা ভাঙ্গিবে না। অথবা তীক্ষাগ্র লৌহশলাকা দ্বারা অঙ্কিত করিয়া চূৰ্ণ লেপন করিলে অকৃত্রিম পায়৷ উজ্জ্বল হইবে ও কৃত্রিম পায়ু মলিন হইয়া যাইবে। ক্ষৌমবস্ত্রে ঘর্ষণ করিলে পুতিকার ন্যtয় বর্ণবিশিষ্ট কৃত্রিম পাল্লার দীপ্তি নষ্ট হইয়া যায় । ওজনদ্বারাও কৃত্রিম পান্ন। নির্ণয় করা যায় । পাল্লার মূল্য –একথও পদ্মরাগ ও একখণ্ড পাল্লা ওজমে সমান হইলে পদ্মরাগ অপেক্ষ পারার মূল্য বেশী হইবে । প্রাপ্তিস্থান।-য়ুরোপের ইউরাল এবং অলটাই পৰ্ব্বতে সৰ্ব্বোৎকৃষ্ট পান্না পাওয়া গিয়াছে। ১৮৩০ খৃষ্টাব্দে ইউরাল পৰ্ব্বতের উত্তরভাগে সৰ্ব্বপ্রথম পায় পাওয়া গিয়াছিল। ইহার পরে এখানে অনেক উৎকৃষ্ট পাল্লা আবিষ্কৃত হয়। অষ্ট্রিয়াতেও অনেক বৃহৎ ও উৎকৃষ্ট পাল্লা পাওয়া গিয়াছে । এসিয়া মহাদেশে যাইবিরিয়ার উপকূলে এবং ব্রহ্মদেশের স্থানে স্থানে অনেক পাল্লার অাকর অাছে। অযোধ্যার সম্রাটু কর্তৃক মহারাণী বিক্টেরিয়াকে যে বৃহৎ পান্নাট প্রদত্ত হইয়াছে, তাহ ব্ৰহ্মদেশে পাওয়া গিয়াছিল । আফ্রিকা মহাদেশের মিসরদেশে বহুমূল্য পায় পাওয়া যায়। সাহারায় পৰ্ব্বতের এবং পুরকৃনদীর পান্নার আকর সর্বত্র প্রসিদ্ধ। আমেরিকা মহাদেশ হইতেই এখন সৰ্ব্বোৎকৃষ্ট পাল্লার আমদানী হয়। স্পেনীয়দিগের কর্তৃক পেরুজয়ের পর হইতে এখানে প্রচুর পরিমাণে পায়া আবিষ্কৃত হইয়াছে। প্রাচীনকালের লোকেরা পায় যে বিশেষরূপে জানিতেন এবং যথেষ্ট ব্যবহার করিতেন, তদ্বিষয়ে কিছুমাত্র সন্দেহ নাই । ভিন্ন ভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন নামে ইহা প্রচলিত অাছে। অতি প্রাচীন সংস্কৃত গ্রন্থে মরকতের উল্লেখ शांग्न ! *jब्ॐि G হরকুলেনিয়ামের ভূগর্ভ হইতে পারার অলঙ্কার পাওয়া গিয়াছে। প্লিনি, আইসিডোরাস, সেলো, বেনমনসুর প্রভৃতি প্রাচীন পুরাবিদগণ অনেকেই এই রত্নের উল্লেখ করিয়া গিয়ছেন । পারসিকের। অগুtষ্ঠ মণি অপেক্ষ পাল্লার বেশী আদর করিত। হিন্দুরা অতি প্রাচীনকাল হইতে ইহা ব্যবহার করিতেছে। তাছাদের অলঙ্কার এবং সুন্দর সুন্দর প্রব্যে এই রত্ন প্রচুর পরিমাণে ব্যবহৃত হয় । রণজিত সিংহ তখনকার সৰ্ব্বোৎকৃষ্ট পান্নায় প্রস্তুত বলয় পরিধান করিতেন । পায়। খোদাই। —পান্না খোদাই করিয়া সুন্দর সুন্দর মূৰ্ত্তি প্রস্তুত করা যাইতে পারে । হামদেশে যুদ্ধদেবের মন্দিরে দুই ফিটু উচ্চ একটী দেবমূর্তি আছে । কথিত আছে—ইহা একটা পান্ন হইতে প্রস্তত হইয়াছিল । প্রসিদ্ধ পায়।--দিল্লীর মোগলসম্রাটু জাহাঙ্গীরের একটা