পাতা:বিশ্বকোষ একাদশ খণ্ড.djvu/২৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

- পাশ্বনাথ [ ২৯৯ ] g পাশ্বনাথ " “মিত্রকৃত্যমপদিশ্য পাশ্বতঃ প্রস্থিতং তমলবস্থিতং প্রিয়াঃ ।” ( রঘু ১৯৩১ ) পাশ্বতীয় (ত্রি ) পাশ্বতোভবঃ পাশ্ব (মুখপাশ্বতসোলাপশ্চ। পা ৪।২।১৩৮ বা ) ইত্যস্ত বৰ্ত্তিকেক্ত্যি ছ। ১ পার্শ্বভব, যাহা পাশ্ব হইতে অথবা পাশ্বদেশে হয় । পাশ্বদ ( পুং ) পাশ্ব-দা-ক । অহচর। পাশ্বাহ (পুং) পাশ্বদেশে ব্যথা। পাশ্ব দেবগণি, একজন বিখ্যাত জৈন ধতি, ইনি ১৯৬৯ সম্বতে হরিভদ্র রচিত ‘ছায়প্রবেশের পঞ্জিকা রচনা করেন। আখ্যানমণিকোষ-রচনাকালে ইনি অগ্রদেবপুরিকেও সাহায্য কল্পিয়াছিলেন । পাশ্বদেশ (পুং ) পাশ্বভাগ, পঞ্জল্পের স্থান । পাশ্ব নাগ, একজন জৈন গ্রন্থকার, ইনি ১০৪২ সংবতে ‘জাত্মান্থ শাসন’ রচনা করেন । পাশ্বনাথ (পুং ) জিনভেদ। জৈনদিগের ত্রয়োবিংশতি তীর্থঙ্কর । ভাবদেবহুরির পাশ্বনাথচরিতে লিখিত আছে,—বারাণসীপুরীতে ইক্ষাকুবংশীয় অশ্বসেন নামক এক নরপতি ছিলেন। ইনি রাজেচিত সমুদায় গুণে বিভূষিত হওয়ায় ইহার ভুবনবিখ্যাত যশঃসৌরডে দিগৃদিগন্ত আমোদিত হইয়াছিল । ইনি অধিক সময়েই ধৰ্ম্মালোচনা এবং খুfামুষ্ঠান করিয়া অতিবাহিত করিতেন । ইহার মহিষীর নাম বাম । বামা সৰ্ব্ববিষয়েই বিদূষী ছিলেন, পাপকৰ্ম্মে ইহার আদে মতি ছিল না, সকল সময়েই পবিত্রভাবে অবস্থান করিতেন, যদি কেহ পাপকৰ্ম্মের অনুষ্ঠান করিত, তাহা হইলে তিনি মনে মনে ব্যথিত হইতেন । দয়া দাক্ষিণ্যাদি অপরাপর গুণগুলিও ইছার নিকট সমভাবেই বর্তমান ছিল । রমণীকুলের ললামভূত বামা সত্য সত্যই বামাকুলের শিরোমণি ছিলেন। একদ। চৈত্রমাসে কৃষ্ণপক্ষীয় চতুর্থী তিথিতে বিশাখানক্ষত্রের যোগ হইলে মহিষী বাম নিশীথ সময়ে একটা অদ্ভুত স্বপ্ন সন্দর্শন করিলেন। তিনি যে চতুর্দশট মহ স্বপ্ন দর্শন করেন, তাহা একজন তীর্থঙ্করের জন্মসুচক। বাম তাহার মুখমধ্যে গজেন্স, বৃষভ, সিংহ, লক্ষ্মী, মালা, শশী, রবি, ধ্বজ, সরোবর, সমুদ্র, বিমান, অষ্টবসু ও অনিল এই চতুৰ্দ্দশটিকে প্রবেশ করিতে দেখিলেন। মহিষীর এই স্বপ্নদর্শনবৃত্তান্ত ক্রমে রাজার কর্ণগোচর হইল। কিছুদিন পরে বামীও হৃষ্টান্তঃকরণে গর্ভধারণ করিলেন। সেই সময়ে তিনি কল্পলতিকার স্তায় শোভা পাইতে লাগিলেন । স্বৰ্গ হইতে দেবগণ আসিয়া কিঙ্করের দ্যায় গর্ভবতী বামার শুশ্ৰুধ করিতে লাগিলেন এবং গর্ভকালীন যে বস্তুতে র্তাহার অভিলাষ জন্মিত, তৎক্ষণাৎ তাহা পূরণ করিতে লাগিলেন । ক্রমে নবমমাষ উপস্থিত হইল, পৌষমাসের কৃষ্ণপক্ষীয় দশমী তিথিতে বিশাখানক্ষত্রের যোগ হইলে শুভলগ্নে এবং শুভ মুহুর্তে নিশীথসময়ে বামাদেবী একটী পুত্র প্রসৰ করিলেন । পুত্রট নীলবর্ণ এবং সর্পচিহ্নে চিহ্নিত হইল। প্রসবকরিবামাত্র দেবগণ স্বৰ্গ হইতে দুন্দুভিনাদসহ পুষ্পবৃষ্টি করিতে লাগিলেন। দিকৃসকল এবং সরোবরনিচয় প্রসন্ন হইল । ভগবান হুতাশন দক্ষিণাচ্চি হইয়া মাহুতি গ্রহণ করিতে লাগিলেন । ত্ৰিবিধ গুণশালী সমীরণ ধীরে ধীরে বহিতে লাগিল । এই প্রকার আরও অনেকানেক মাঙ্গলিক ক্রিয়াসকল সেই সময়ে উপস্থিত হইল। সহসা ত্রিভুবনবাসী সকলেই জানন্দিত হইল। অধিক কি ? নরকবাসীরাও কিছুক্ষণের জg পরমাননা লাভ করিতে লাগিল । জাতবালককে ভগবান জিন বলিয়া বুঝিতে পারিয়া ভোগঙ্কশা প্রভৃতি অধোলোকনিবাসিনী দিকুমারিকাগণ স্ব স্ব স্থান হইতে আগমন করিয়া সুতিকাগারের নিকট উপস্থিত হইল এবং জিনকে নমস্কার করিয়৷ পরে জিনঞ্জননী বামীকেও নমস্কার করিল। ক্রমে মেঘঙ্কর প্রভৃতি উদ্ধলোকনিবাসিনী দিকৃকাগণও সেই সময়ে সুতিকাগৃহের নিকট আসিয়া পুষ্পবর্ষণ করিল। এইরূপ অদ্যান্স বহুসংখ্যক দেব ও দেবাঙ্গন আসিয়া জাতবালকের মাঙ্গলিকক্রিয় সকল অমুষ্ঠান করিয়া জন্মোৎসব সম্পন্ন করিলেন । বামীদেবী স্বীয় তনয়কে সুন্দর নেপথ্যসাজে সজ্জিত দেখিয়৷ সাতিশয় আনন্দিত হইলেন। রাজা অশ্বসেন পুত্রের জন্মবৃত্তান্ত শ্রবণ করিয়া বার্তাবহকে বহুমূল্য পারিতোষিক দিলেন, প্রীত হইয়া কারাবামীদিগকে মুক্ত করিলেন এবং দিব্যাঙ্গনদিগকে অনিয়ন করিয়া নৃত্য, গীত, জয়ধ্বনি, উলুধ্বনি ও শঙ্খধ্বনি প্রভৃতি নানাবিধ মঙ্গলকার্য সম্পাদন করিলেন। বামীদেবী গর্ভাবস্থায় এক দিন রাত্রিকালে একটা সপকে নিজের পাশ্বদেশে বিসপিত হইতে দেখিয়াছিলেন, এই কথা পতির নিকট ব্যক্ত করিলেন । তাহ শুনিয়া রাজা স্বীয়পুত্রের পাশ্ব’ এই নাম রাখিলেন । ইন্দ্ৰদিষ্ট ধাত্রীগণ আসিয়া পাশ্বকে পালন করিতে লাগিল । পাশ্ব দিন দিন দেহোপচয় লাভ করিয়া শরীরশোভায় জগৎ আলোকিত করিলেন, মহাপুরুষের লক্ষণ সকল পাশ্বের শরীরে ক্রমে অভিব্যক্ত হইতে লাগিল। অমাম্বুষাকৃতি পাশ্ব ক্রমে বাল্যকাল অতিক্রম করিয়া যৌবনে পদার্পণ করিলেন। তিনি নবহন্তপরিমিত শরীর ধারণ করিলেন। র্তাহার শরীরশোভায় ত্রিভুবনবাসী সকলেই মুগ্ধ হইল । একদিন রাজা অশ্বসেন স্বীয় অস্থিাসম্বগুপে বসিয়া আছেন,