পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/৫৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

6tb-Qo মুক্তাহারবিরাজমানপূথুলোত্ত জস্তনোস্তাষিনী,— [ মহাভারত । আর ধনু নিল শীঘ্র ভীষ্ম বীরবর। গজেন্দ্র মারিতে যেন ধায় মৃগপতি। সেই ধনু কাটিলেন পার্থ ধনুৰ্দ্ধর ॥ পদভরে কৃষ্ণের কম্পিতু বর্ধমতী ॥ ভীষ্ম তারে প্রশংসিল সাধু সাধু করি। শরবৃষ্টি করে বীর আর ধনু ধরি ॥ বাস্থদেব সারথি অর্জন ধনুৰ্দ্ধর। দোহারে বিন্ধিয়া ভীষ্ম করেন জর্জর ॥ লক্ষ শর আরো মারে সৈন্যের উপর । কোটি কোটি সেনাপতি যায় যমঘর ॥ কালান্তক যম যেন ভীষ্ম মহাবীর । পাণ্ডবের সৈন্য মারি করিল অস্থির ॥ মনেতে সন্ত্রম পাইলেন যদুবীর । ভাষ্মের শরেতে বিদ্ধ শু্যামল শরীর ॥ তবে পার্থ মাহাবীর গাণ্ডীব ধরিয়া ! কাটেন ভীষ্মের বাণ সন্ধান পূরিয়া ॥ আর বাণ এড়িলেন অতিশয় রোষে । পড়িল কৌরব-সৈন্য শমনের গ্রাসে ॥ দেখিয়া হইল রুষ্ট গঙ্গার নন্দন । আকাশ ছাইয়ো করে অস্ত্র বরিষণ ॥ নাহি দিক বিদিক মিহিরের প্রকাশ। শূন্যমাৰ্গ রুদ্ধ করে না চলে বাতাস ॥ দিবানিশি নাহি জ্ঞান হইল অর্ণধার। নিবারিতে ন পারেন কুন্তীর কুমার ॥ পাণ্ডবের সৈন্য সব হইল কাতর। সমরে সমর্থহীন পার্থ ধনুৰ্দ্ধর ॥ অর্জন দুর্বল আর সৈন্যের নিধন । নিবৃত্ত"না হয় ভীষ্ম মারে সৈন্যগণ ॥ মহাকোপ উপজিল দৈবকী-নন্দনে। আজি আমি বিনাশিব যত কুরুগণে ॥ প্রতিজ্ঞা করেছি পূর্বে বাণ না ধরিব। না ধরিলে আজি রণে পাণ্ডবে হারাব ॥ এতেক চিন্তেন লক্ষীকান্ত মনে মনে । চোখ চোখ বাণ ভীষ্ম মারে ঘনে ঘনে ॥ অস্থির হইয়া হরি কমললোচন। লাম্ব দিয়া রথ হৈতে পড়েন তখন ॥ ক্রোধে রথচক্র ধরি সৈন্যের সাক্ষাৎ ৷ ভীষ্মকে মারিতে যান ত্রিলোকের নাথ ॥ চমৎকৃত হয়ে চাহি দেখে সৰ্ব্বজন । ভীষ্মেরে মারিতে ঘান দেব নারায়ণ ॥ সন্ত্রম না করে ভীষ্ম হাতে ধনুঃশর । নিৰ্ভয়ে বসিয়া ভাবে রথের উপর ॥ আইসে ভুবনপতি মারিতে আমাকে । মারুক আমারে যেন দেখে সর্ববলোকে ॥ শীঘ্ৰ আসি কৃষ্ণ কর আমারে সংহার। তোমার প্রসাদে তরি-এ ভব-সংসার ॥ তোমার বাণেতে যদি সংগ্রামে মরিব । দিব্য বিমানেতে চড়ি বৈকুণ্ঠে যাইব ॥ এতেক বলিয়া বীর ত্যজে ধনুঃশর ! কৃতাঞ্জলি স্তুতি করে মহাধনুৰ্দ্ধর । ভক্তের অধীন তুমি বিরিঞ্চিমোহন । নমস্তে সুদাম বিপ্র দারিদ্র ভঞ্জন ৷ ধ্রুবকে অভয় পদ দিলা চক্রধারী। প্রহ্নাদে রক্ষিল হিরণ্যকৃশিপু সংহারি ॥ নমস্তে বামনমূৰ্ত্তি নমো জনাৰ্দ্দন । নমো রামচন্দ্র দশস্কন্ধ বিনাশন । ভক্তের অধীন তুমি জানে চরাচরে । আমার প্রতিজ্ঞ আজি রাখিল সমরে ॥ ইত্যাদি অনেক স্তব করে ভীষ্ম বীর । আনন্দে পূর্ণিত মন লোমাঞ্চ শরীর। দেখিয়া কৃষ্ণের ক্রোধ ইন্দ্রের নন্দন । রথ হৈতে নামি ধাইলেন সেইক্ষণ ॥ দশ পদ অন্তরে ধরেন দুই হাত । সম্বর সম্বর ক্রোধ ত্রিভুবন নাথ ॥ প্রতিজ্ঞা করেছি পূর্বে তোমার অগ্ৰেতে । ভীষ্মের বিনাশ আমি করিব যুদ্ধেতে ॥ ভীষ্মে মারি কুরুবংশ করিব যে ক্ষয় । তোমার প্রসাদে রণে হুইবেক জয় ॥ অর্জনের বচন শুনিয়া দামোদুর । | ক্ষান্ত হয়ে চড়িলেন রথের উপর । অনস্তর ধনঞ্জয় ধরি শরাসন । ইন্দ্রদত্ত দিব্য বাণ করেন ক্ষেপণ ॥