পাতা:শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত পঞ্চম ভাগ.djvu/২৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

३१२ শ্ৰীশ্ৰীরামকৃষ্ণ কথামৃত—৫ম ভাগ [ পরিশিষ্ট সন্ধ্যা হইয়াছে, ফরাস আলো জালিয়া দিয়া গেল। কেশব প্রভৃতি ব্রাহ্মভক্তগণ সকলে জলযোগ করিয়া যাইবেন । খাবার আয়োজন হইতেছে। কেশব (সহস্তে )—আজও কি মুড়ি ? শ্রীরামকৃষ্ণ (সহস্তে )–হৃদু জানে। পাতা পড়িল । প্রথমে মুড়ি, তার পর লুচি তার পর তরকারি। (সকলের খুব আননা ও হাসি ) । সব শেষ হইতে রাত দশটা বাজিয়া গেল। ঠাকুর পঞ্চবটমূলে ব্রাহ্মভক্তগণের সঙ্গে আবার কথা কহিতেছেন। শ্রীরামকৃষ্ণ (সহস্তে কেশব প্রভৃতির প্রতি )—ঈশ্বর লাভের পর সংসারে বেশ থাকা যায়। বুড়ী ছুয়ে তার পর খেলা কর না। “লাভের পর ভক্ত নির্লিপ্ত হয়, যেমন পাকাল মাছ। পাকের ভিতর থেকেও গায়ে পাক লেগে থাকে না ।” প্রায় ১১টা বাজে, সকলে যাইবার জন্ত অধৈৰ্য্য। প্রতাপ বল্লেন, আজ রাত্রে এখানে থেকে গেলে হয় । শ্রীরামকৃষ্ণ কেশবকে বলিতেছেন, আজ এখানে থাক না। কেশব (সহস্তে )—কাজটাজ আছে ; যেতে হবে। শ্রীরামকৃষ্ণ-কেন গে, তোমার আঁসচুবড়ির গন্ধ না হলে কি ঘুম হবে না। মেছুনি মালীর বাড়ীতে রাত্রে অতিথি হয়েছিল । তাকে ফুলের ঘরে শুতে দেওয়াতে তার ঘুম আর হয় না । ( সকলের হাস্ত )। উস্ খুস করছে, তাকে দেখে মালিনী এসে বললে-কেন গো—ঘুমচ্ছিস নি কেন গো ? মেছুনি বললে কি জানি না, কেমন ফুলের গন্ধে ঘুম হচ্ছে না, তুমি একবার আঁসচুবড়িটা আনিয়ে দিতে পার ? তখন মেছুনি আসচুবড়িতে জল ছিটিয়ে সেই গন্ধ আভ্রাণ করতে করতে গভীর নিদ্রীয় অভিভূত হল।” ( সকলের হাস্ত্য )। বিদায়ের সময় কেশব ঠাকুরের চরণ স্পৰ্শ-করা একটা ফুলের তোড়া গ্ৰহণ করিলেন ও ভূমিষ্ট প্রণাম করিয়া বিধানের জয় হউক এই কথা ভক্তসঙ্গে বলিতে লাগিলেন । ব্রাহ্মভক্ত জয়গোপাল সেনের গাড়িতে কেশব উঠিলেন, কলিকাতায় যাইবেন ।