পাতা:শিখ-ইতিহাস.djvu/৩৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ইংরাজদিগের সহিত যুদ্ধ כ\ט): শিখ-সৈন্যের সে আত্মাভিমান পুনরায় হৃদয়ে জাগরিত হইল। এই সময়ে ইংরাজনির্মিত একটি পরিদর্শন-মঞ্চ শিখদিগের হস্তগত হয়। সে রাত্রে তথায় কোন ইংরাজ প্রহরী ছিল না । সেই স্থান অধিকার করিয়া, এক্ষণে ইংরাজদিগের স্বরক্ষিত স্থানের সন্নিকটে শিখ-সৈন্যগণ আপনাদিগের রণ নৈপুণ্য ও সামরিক কৌশল প্রদর্শন করিতে লাগিল। এতৎসত্বেও প্রবীণ এবং বিচক্ষণ ব্যক্তিগণের বিচার-শক্তির প্রতি তাহারা কখনও উপেক্ষা প্রদর্শন করিল না। সমগ্র শিখ-জাতির তদৃষ্টি যে বিপৎপাত অবশুম্ভাবী, তাহার ঘোর বিভীষিকাময়ী মূর্তি স্বতঃই তাঁহাদের মনে উদয় হইতে লাগিল। পারিবারিক বিপ্লব বা বৈদেশিক জাতি অীনতা-পাশ হইতে পরিত্রাণের আর কোন উপায়ই তাহারা দেখিতে পাইল না । ‘আতারি' সম্প্রদায়ের শুভ্ৰ কেশ সামন্ত শুমি সিং স্বদেশের এবং স্ব-জাতির শক্রর সহিত প্রথম যুদ্ধে নিহত হইতে কৃতসংকল্প হইয়া, আপনার অভিপ্রায় ব্যক্ত করিলেন। এইরূপে গোবিন্দের মুক্তাত্মার তুষ্টসাধনে, বৃদ্ধ শু্যাম সিং আপনার জীবন উৎসর্গ করিতে প্রস্তুত হইলেন । র্তাহার মনে হইল, গোবিন্দের সাধারণ-তন্ত্রের নিগুঢ় উদ্দেশু সাধনের ইহাই একমাত্র উপায় । বৃটিশ-শিবিরে ইংরাজ-সৈন্যগণের উৎসাহের আর অবধি রহিল না। তখনও ইংরাজসৈন্যের হৃদয়ে অগাধ বিশ্বাস ;—ইংলণ্ডের ভাগ্যলক্ষ্মী স্বপ্রসন্ন। ইংলণ্ডের পরিণাম চিন্তা করিয়া, ইংরাজপক্ষীয় সৈন্যগণের মনে তখন আর অণুমাত্র হতাশার চিহ্ন পরিলক্ষিত হইল না। আলিওয়ালের বিজয়লাভের পর, সকলেই আশার উচ্চ চূড়ায় আরোহণ করিয়াছিলেন, এবং সৈন্যগণের উৎসাহ দ্বিগুণ বfদ্ধত হইয়াছিল। ফেব্রুয়ারী মাসের প্রারম্ভেই দিল্লী হইতে দুৰ্দ্দমনীয় অসংখ্য সৈন্য ও কামান আসিয়া পৌছিল ; সেই সময়ে প্রচুর পরিমাণে যুদ্ধোপকরণও দিল্লী হইতে সরবরাহ হইয়াছিল। মহাপ্রতাপশালী হস্তাযুথ শ্রেণীবদ্ধ হইয়া প্রকাও প্রকাও গুরুভার কামান সমূহ স্থানস্তরে বহন করিয়া লইল ; তাহাতে ইংরাজপক্ষীয় সিপাহী-সৈন্য অনুপম আনন্দ উপভোগ করিতে লাগিল । এদিকে ইংরাজ-জাতির বহুবিস্তৃত সাম্রাজ্য-প্রতিষ্ঠার নিদর্শন স্বরূপ সেই ভয়াবহ কামান শ্রেণী অবলোকন করিয়া, ইংরাজ-সৈন্যের অন্তঃকরণ গর্বে স্ফীত হইয়া উঠিল। তখন সকলেই স্থির করিলেন, ১০ই ফেব্রুয়ারী শিখ-সৈন্তের আবাস-স্থান দুর্গ আক্রমণ করিতে হইবে । বিপক্ষ ইংরাজ-সৈন্যের মনে প্রতিহিংসা গ্রহণের আশা বলবতী হইয়া উঠিল । স্বতরাং সম্পূর্ণ বিজয়লাভে কৃতনিশ্চয় হইতে, সৈনিক পুরুষগণ বিবিধ উপায় উদ্ভাবন করিতে লাগিলেন। ইংরাজ-গোলন্দাজ সৈন্যদলের ‘অফিসার” বা কর্মচারী সৈন্যগণের মনে স্বতঃই উদয় হইল যে, ইঞ্জিয়ারদিগের প্রবর্তিত প্রচলিত নিয়ম অনুসারে অতি স্বকৌশলে কামান চালনা করিতে হইবে ; এবং অসহায় পদাতিক সৈন্তগণ কর্তৃক বিধ্বস্ত হইবার পূর্বেই, বিপক্ষদিগের দুর্গ-প্রাচীর সন্মুখভাগ হইতে ভয় করিয়া, দুর্গপার্থ এবং তৎপশ্চাৎ হইতে সেই দুর্গে প্রবেশ করিতে হইবে। কিন্তু বিচারক্ষম অধৈর্য সেনাপতিগণের নিকট এই উপায়-প্রণালী সমীচীন বলিয়া বোধ হইল না। র্তাহারা